কাউকে কিনে দেন বই। কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন টাকা। গত ১০ বছর ধরে এ ভাবেই ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় উৎসাহ জোগাচ্ছেন ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম দ্বারিকাপল্লি কে এস শিক্ষায়তনের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব দে।
২০০৪ সালের এপ্রিল মাস নয়াগ্রামের দ্বারিকাপল্লি জুনিয়র হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগ দেন বিপ্লববাবু। ওই বছর ফল প্রকাশের পর বুঝতে পারেন, ছেলেমেয়েদের বই কিনে দেওয়ার ক্ষমতা নেই অনেক পরিবারেরই। ২০০৫ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিপ্লববাবু পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির প্রথম তিন জনের পড়ার অধিকাংশ বই কিনে দেন। সেই শুরু। তারপর থেকে মেধাবী, দুঃস্থ পড়ুয়াদের সাহায্য করে চলেছেন বিপ্লববাবু। পড়ুয়াদের বই কিনে দেওয়া-সহ অন্য খরচ বহন করেন তিনি।
শুধু নিজের স্কুলের পড়ুয়াদের নয়। অন্য স্কুলের দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়াদেরও সাহায্য করেন বিপ্লববাবু। কেশপুরের ঝাঁতলা গ্রামের বাসিন্দা সুস্মিতা মণ্ডল ময়না বিবেকানন্দ কন্যা বিদ্যাপীঠের ছাত্রী। সুস্মিতার বাবা বিনয়বাবু ক্যানসারে আক্রান্ত। জমি বিক্রি করে চিকিৎসা করিয়েছেন তিনি। সুস্মিতার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন বিপ্লববাবু।
নয়াগ্রামের বীরকাদা গ্রামের মণিমালা সাহু ২০১৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। আর্থিক অবস্থা খারাপ। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। মণিমালার পাশে দাঁড়িয়েছেন বিপ্লববাবু।
মণিমালার বাবা হৃষিকেশবাবু বলেন, ‘‘মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানোর ক্ষমতা নেই। বিপ্লববাবু কলেজে মেয়েকে ভূগোলে অনার্সে ভর্তি করে দিয়েছেন। মাসে দু’হাজার টাকা আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন।’’ বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘আমার এই কাজের জন্য কিছু মানুষ এগিয়ে এসেছেন। এখন ২৮ জন ছাত্রছাত্রীকে মাসিক সাহায্য করে চলেছি।’’ বিপ্লববাবুর মতোই কলকাতার বাসিন্দা রঞ্জিত সাহা এবং নদিয়ার কল্যাণীর চিকিৎসক অশোক বসু ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করেন। বিএসএনএল এর অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক রঞ্জিতবাবু রঞ্জিতবাবু জানান, তিনি ১০ জন ছেলেমেয়েরঅনার্স স্তরে পড়ার খরচ চালিয়ে আসছেন। চিকিৎসক অশোকবাবু ও তাঁর স্ত্রী অধ্যাপিকা মালা বসু ২০০৩ সাল থেকেই মেধাবী দুঃস্থ মেয়েদের পড়াশোনার জন্য সাহায্য করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy