মধ্যমণি মন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র
বড় পদযাত্রা শেষে শুভেন্দু অধিকারী খুশি হয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ঢুকলেন। কিছুক্ষণ পরেই দরজায় চাপড় পড়ল।
ক্ষুব্ধ কর্মীদের একাংশ হইচই বাধিয়ে দিয়ে প্রশ্ন তুললেন, ‘‘এ কাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন দলীয় পর্যবেক্ষক! ভিতরে যাঁরা বৈঠক করছেন, তাঁদের বেশির ভাগই তো ঠিকাদারির সঙ্গে যুক্ত। দলের প্রতি তাঁদের ভালবাসা কোথায়!’’
দরজা অবশ্য খোলেনি। বৈঠক চালিয়ে যান শুভেন্দু। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে ঝাড়গ্রাম শহরের ১৮টি ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক ও প্রাক্তন কাউন্সিলরদের সতর্ক করে দিয়ে শুভেন্দু জানিয়ে দেন, তাঁদের সম্পর্কে মানুষের কী ধারণা সেটা জানতে তিনি নিজে টোটোতে কিংবা বাইকে চেপে ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে ঘুরে খোঁজ নেবেন।
ক্ষুদিরামের আত্মোৎসর্গের দিনে রবিবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম শহর তৃণমূলের ডাকে অরণ্যশহরে পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তা হাঁটেন শুভেন্দু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। পরে বিকেল ৫টা নাগাদ ঝাড়গ্রাম শহরের বলরামডিহি এলাকার অগ্রসেন ধর্মশালায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর, ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক ও বুথস্তরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন শুভেন্দু। বৈঠকে জেলা তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন। এ ছাড়াও ছিলেন দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতারাও। কিন্তু বৈঠক শুরু হতেই দলের একাংশ কর্মী বাইরে হইচই শুরু করে দেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, প্রাক্তন কাউন্সিলদের আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠজনেরা ঠিকাদারির সঙ্গে যুক্ত। ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়েকরাও বড় ঠিকাদার। এরা কী দলের ভাল করবে। সংগঠনকে বাঁচাতে হলে পুরনো কর্মীদের সঙ্গে শুভেন্দুকে বসতে হবে। এক মহিলা কর্মী সভাঘরের বন্ধ দরজা চাপড়াতে থাকেন। পরে শহর তৃণমূলের কয়েকজন নেতা বিক্ষোভকারীদের শান্ত করে ব্যাখ্যা দেন, কয়েকজন কাউন্সিলর দেরিতে আসায় ভিতরে ঢুকতে পারেননি। তাঁদের ঢোকানোর জন্যই ওই মহিলা কর্মী দরজায় চাপড় দিচ্ছিলেন।
কী হয়েছে ওই বৈঠকে?
তৃণমূল সূত্রের খবর, বিরোধীরা কোথাও বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন শুভেন্দু। ১৫ অগস্ট প্রতিটি ওয়ার্ডে জাতীয় পতাকা তোলার নির্দেশ দিয়ে বৈঠকে শুভেন্দু জানিয়ে দেন, যাঁরা দলের কাজ করতে পারবেন না, তাঁদের সরে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে নতুন লোক খুঁজে নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে শুভেন্দু জানান, খুব শীঘ্রই তিনি অরণ্যশহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন শুরু করবেন। মানুষের মনে নেতাদের ভাবমূর্তি কেমন অলিগলিতে ঘুরে তা খোঁজ নেবেন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভের প্রসঙ্গ এড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘শহিদ ক্ষুদিরামের আত্মত্যাগের দিনে কেবলমাত্র শহরের চার হাজার মানুষ পদযাত্রায় হেঁটেছেন। আমি খুবই উৎসাহিত। সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy