Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলের কোন্দলই বাধা, ফিরল ছাগল ছানা

মামুলি ছাগল বিলি। আর তাকে ঘিরেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

মামুলি ছাগল বিলি। আর তাকে ঘিরেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ।

একপক্ষ প্রশ্ন তুলল, গ্রামের বাসিন্দাদের বঞ্চিত করে ‘বহিরাগত’দের ছাগল বিলি করা হচ্ছে কেন? লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর এ ভাবে ছাগল বিলি করা যায় কি? উঠল সে প্রশ্নও। অন্য পক্ষ দাবি করল, বিলি কোথায়! ছাগলদের তো বিমা করানোর জন্য আনা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডেবরার লোয়াদা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় তখন রীতিমতো উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলছে। ফল যা হওয়ার তাই হল। দীর্ঘক্ষণ ধরে আকচাআকাচি শোনার পর বেশ কয়েকটি ছাগল নিয়ে বাড়ি ফিরলেন স্বর্নির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা।

পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের খবর, গত মাস দুয়েক আগেই এই ছাগল বিলি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। লোয়াদা গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই ছাগল সরবরাহের বরাত পেয়েছে স্থানীয় একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। এ দিন ওই গোষ্ঠীর কয়েকজন মহিলা ও প্রাণী সম্পদ দফতরের কর্মীরা বেশ কয়েকটি ছাগল নিয়ে লোয়াদা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের অদূরে আসেন। সেখানে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের ছাগল বিলি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সভাপতি রিঙ্কু ত্রিপাঠী বলেন, “ব্লক প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের নির্দেশে আমরা ছাগল বিলি করতে গিয়েছিলাম। আসলে ব্লকে নিয়ে গিয়ে বিলির কথা থাকলেও পরিবহণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোয়াদা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনেই বিলি হচ্ছিল।” ছাগল বিলি পর্ব শুরু হতে না হতেই এ দিন তৃণমূলের স্থানীয় কয়েকজন নেতা-কর্মী এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভে শামিল তৃণমূলের লোয়াদা অঞ্চলের সহ-সভাপতি সামিম ইকবাল বলেন, “সাংসদ প্রতিনিধি অলোক আচার্যের কথায় ব্লকের প্রাণী কর্মাধ্যক্ষ কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ছাগল বিলি করাচ্ছিলেন। আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষকে বঞ্চিত করে বাইরের মানুষকে ছাগল দেওয়া হচ্ছিল। তাই আমরা বাধা দিয়েছি।” এমনকি, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বেলারানি পড়ানি বলেন, “আমাকে না জানিয়েই ছাগল বিলি হচ্ছিল। আমি কিছুই জানিনা।”

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ডেবরা ব্লকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। এ দিনের ঘটনায় আরও একবার প্রকাশ্যে এসেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এমন ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূলের ব্লক কোর কমিটির সদস্য তথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রতন দে বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতিতে স্থায়ী সমিতিতে কোনও আলোচনা না করেই ছাগল বিলি হচ্ছিল। অলোক আচার্যের পরামর্শে প্রাণী কর্মাধ্যক্ষ নিজের খেয়ালখুশি মতো এই কাজ করছিলেন। তাই গ্রামবাসীরা বাধা দিয়েছে।’’ যদিও বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির প্রাণী কর্মাধ্যক্ষ জারিনা বিবি বলেন, “ছাগল বিলি তো ৯ মার্চ হয়ে যাওয়ার কথা। আমি জানি ওখানে ছাগলের বিমা করানো কাজ হচ্ছিল।” আর তৃণমূল সাংসদ প্রতিনিধি তথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অলোকের কথায়, “স্থায়ী সমিতিতে দু’মাস আগে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তার পরে ছাগল বিলি হয়েছে। লোয়াদায় ছাগলের বিমা কাজ চলছিল বলে জানি। রতনের এমন অকারণ বিরোধিতার জন্য ধন্যবাদ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Politics Kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE