রামনবমীর অনুষ্ঠানে শুভেন্দু।
একই মাঠে উৎসবের আয়োজন নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির দ্বৈরথ গড়িয়েছিল হাইকোর্টে। রামনবমীর উৎসবে অবশ্য দূরত্ব বজায় রাখল দুই শিবির। শোভাযাত্রায় বেরোলেন বিজেপি ঘনিষ্ঠেরা। আর রামের মূর্তিতে ফুল দিয়ে তৃণমূলের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী গলা মেলালেন কীর্তনে।
শনিবারই মেচেদায় তৃণমূল প্রভাবিতেরা রামনবমীর উৎসব শুরু করে দিয়েছিলেন। সেখানে হাজির ছিলেন বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ তথা এ বারের প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী। তবে মণ্ডপে রামের মূর্তি এসে গেলেও শনিবার উৎসবের মঞ্চে দেখা যায়নি বিজেপি প্রভাবিতদের। রবিবার সকালেই অবশ্য বিজেপি প্রভাবিত মেচেদা রামনবমী উৎসব কমিটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে মেচেদা বাজার এলাকায়। ঘোড়ার গাড়িতে রামের মূর্তি ছাড়াও ছিল ট্যাবলো। শোভাযাত্রা শেষে মণ্ডপে পুজো, যজ্ঞ ও রামকথার অনুষ্ঠান হয়। ছিল খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সর্বভারতীয় সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা বিজেপি নেতা তথা উৎসব কমিটির সহ-সভাপতি নারায়ণ পালই।
তৃণমূল প্রভাবিত শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক রামনবমী উৎসব কমিটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল মেচেদা ইস্কন মন্দির প্রাঙ্গণে। দুপুর দু’টো নাগাদ সেখানে হাজির হন শুভেন্দু। রামের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানানোর পরে খঞ্জনি বাজিয়ে কীর্তনে গলা মেলান তিনি। পরে নন্দীগ্রামের জানকীনাথ মন্দিরেও রামনবমীর উৎসবে যোগ দেন শুভেন্দু। এ দিন শুভেন্দু কোনও মন্তব্য না করলেও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা বিজেপির নাম না করেই অভিযোগ করেন, ‘‘অন্য একটি রামনবমী উৎসবের আয়োজকেরা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে শোভাযাত্রা করেছে। বিজেপির নামে স্লোগান দিয়েছে।’’ যদিও বিজেপি প্রভাবিত ওই উৎসব কমিটির সহ-সভাপতি নারায়ণ পালইয়ের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের লোকজন শোভযাত্রা করে মূর্তি আনার সময় পুলিশ-প্রশাসন তাঁদের সহযোগিতা করেছিল। আর আমাদের শোভযাত্রার আগে নিষেধাজ্ঞা জারি হল।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রামনবমীতে শোভাযাত্রায় রাম-সীতা। কাঁথিতে। নিজস্ব চিত্র
তমলুক শহরেও এ দিন বিজেপি প্রভাবিত রামনবমী উৎসব কমিটি শোভযাত্রা করে। কয়েকশো বাইক-সহ ওই শোভাযাত্রা শালগেছিয়া থেকে নিমতলা হয়ে মানিকতলায় এলে পুলিশ পথ ঘুরিয়ে দেয়। উৎসব প্রাঙ্গণে হাজির ছিলেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী সিদ্ধার্থ নস্কর। তমলুকের এসডিপিও সব্যসাচী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘রামনবমীর শোভযাত্রা শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। তবে মেচেদায় নিষেধ না মেনে শোভাযাত্রা হওয়ায় পদক্ষেপ করা হবে।’’
জেলার অন্যান্য প্রান্তেও রামনবমীর শোভাযাত্রা বেরিয়েছিল। হলদিয়ার চৈতন্যপুর থেকে রামপুর পর্যন্ত মিছিল হয়েছে। দুর্গাচকে আবার নবরাত্রি উৎসব উপলক্ষে দেড়শো কেজি লঙ্কা পুড়িয়ে যজ্ঞ করা হয়। দেশের নানা প্রান্ত থেকে এসেছিলেন ১৮ জন নাগা সন্ন্যাসী।
কাঁথি শহরেও শোভাযাত্রা হয়েছে রামনবমী উদ্যাপন কমিটির উদ্যোগে। ঘোড়ায় টানা সুসজ্জিত রথে রাম-সীতা-হনুমানের পাশাপাশি আদিবাসী নাচ , রণপা নৃত্য, কাঠি নাচ দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমান। শোভাযাত্রার পুরোভাগে ছিলেন উদ্যোক্তা কমিটির আহ্বায়ক তথা কাঁথির পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারী, পা মেলান বিধায়ক বনশ্রী মাইতিও। সন্ধ্যায় ছিল আতসবাজির প্রদর্শনী ও রামায়ণ গান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy