বিজয়ী: সভাধিপতি নির্বাচিত হওয়ার পরে জনসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মাধবী বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কাই সত্যি হল!
জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচনে তৃণমূলের ঘর ভাঙার চেষ্টা চালিয়ে স্নায়ুর চাপ বাড়িয়ে রাখল বিজেপি। আগাম পাল্টা কৌশল নেওয়া ছিল শাসক শিবিরে। তাই কোনও অঘটন ঘটল না। তবে বুধবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচনের সভায় পট পরিবর্তন হল ঘন ঘন। এ দিন প্রত্যাশা মতোই সভাধিপতি হয়েছেন মাধবী বিশ্বাস। আর সহ সভাধিপতি হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে মধুসূদন সরেনকে।
এ দিন দুপুরে জেলাপরিষদ ভবনে জেলা পরিষদের সদস্যদের শপথ গ্রহণ এবং সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি নির্বাচনের সভার আগে নির্বাচিত দলীয় সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বাঁদরভোলায় এক সরকারি অতিথিশালায় ওই বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা- সহ জেলার নেতারা। শাসক দল সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে পার্থ জানিয়ে দেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। কেউ আর্থিক তছরূপে জড়িয়ে পড়লে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর তিনি জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে লালগড়ের মাধবী ও সহ সভাধিপতি পদে নয়াগ্রামের মধুসূদনের নাম ঘোষণা করেন। মহাসচিব সতর্ক করে দেন, বিজেপি শাসক দলের ঘর ভাঙানোর জন্য অন্য কারও নাম প্রস্তাব করতে পারে। এসব প্ররোচনায় পা দেওয়া চলবে না। দলীয় কৌশল অনুযায়ী ঠিক হয়, সভাধিপতি পদের দাবিদার গোপীবল্লভপুর-২ ব্লক থেকে নির্বাচিত সুজলা তরাই নাম প্রস্তাব করবেন মাধবীর।
জেলা পরিষদে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ শেষ হওয়ার পরই শুরু হয় নাটক। দলের সিদ্ধান্ত মেনে মাধবীর নাম প্রস্তাব করেন সুজলা। এ পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক ছিল। এরপরই বিজেপির এক সদস্য সভাধিপতি পদে সুজলার নাম প্রস্তাব করেন। মুহূর্তের স্তব্ধতা। তারপরই সভাকক্ষ জুড়ে শুরু হয় ফিসফাস। তা হলে কি আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে! তবে জল্পনা ডানা উড়ে মেলার সুযোগ পায়নি। সুজলা উঠে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দেন, তিনি সভাধিপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক নন। এরপর শাসকদলের ১৩ জন সদস্য হাত তুলে মাধবীকে সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করেন। একই ভাবে সহ-সভাধিপতি পদে মধুসূদনকে নির্বাচিত করা হয়। বিজেপির তিন সদস্য চুপচাপ বসেছিলেন।
তা হলে কাজে এল না কৌশল? বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘সুন্দর ভাবে বিরোধিতা করাই আমাদের কাজ। এটাই করা হয়েছে।’’ আর সুজলা বলছেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাধবীদির নাম প্রস্তাব করেছি। বিজেপি চক্রান্ত করেছিল। সফল হয়নি।’’ সভাধিপতি মাধবী বলেন, ‘‘সকলকে নিয়ে উন্নয়নের কাজ করব।’’
সভাধিপতি নির্বাচনের পরে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এক অভ্যর্থনা সভায় সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি ও সদস্যদের স্বাগত জানানো হয়। ওই প্রকাশ্য সভায় ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব। জেলা পরিষদের দলীয় সদস্যদের তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘‘পূর্ত আর অর্থ দেখলাম আর বাড়ি চলে গেলাম, এসব চলবে না। মানুষের কাজ করতে হবে। কে, কী কাজ করছেন, আমাদের নজরদারি থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy