Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
স্কুলে থাকতে বাধা খোদ পঞ্চায়েত সদস্যের
Egra

জঙ্গলে তাঁবু খাটিয়ে নিভৃতবাস পরিযায়ীর

এগরা-১ ব্লকের জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতে বহরদা গ্রামের ওই যুবক কাজের সূত্রে মহারাষ্ট্রে ছিলেন।

এখানেই নিভৃতবাস। নিজস্ব চিত্র

এখানেই নিভৃতবাস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ০৩:২২
Share: Save:

মহারাষ্ট্র ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকের নিভৃতবাসে জন্য ঠাঁই হল না স্কুলঘরে। অভিযোগ, স্কুলে থাকতে চাইলে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তাঁকে বাধা দেন। শুধু তাই নয়, ওই পঞ্চায়েত সদস্যের প্রচ্ছন্ন মদতে ওই শ্রমিককে গালিগালাজ করা হয়। স্কুলের পরিবর্তে এলাকায় জঙ্গলে আবর্জনাময় ও দুর্গন্ধময় অস্বাস্থ্যকর জায়গায় ত্রিপল ঘিরে ওই শ্রমিকের নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করেন পঞ্চায়েত সদস্য। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই শ্রমিক।

এগরা-১ ব্লকের জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতে বহরদা গ্রামের ওই যুবক কাজের সূত্রে মহারাষ্ট্রে ছিলেন। গত ১ জুন গ্রামে ফেরেন। সরকারি নির্দেশে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের ১৪ দিন বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকা বাধ্যতামূলক। যদি বাড়িতে থাকার উপায় না থাকে তাহলে গ্রামের সরকারি স্কুলে নিভৃতবাসে থাকতে পারবেন। কিন্তু, অভিযোগ মহারাষ্ট্র থেকে ফেরা বহরদাগ্রামের ওই যুবক প্রাথমিক স্কুলে নিভৃতবাসে থাকতে চাইলে তাঁকে বাধা দেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য প্রতিমা করণ। পূর্ণচন্দ্র করণ নামে ওই যুবকের দাবি, পঞ্চায়েত সদস্যের উস্কানিতে গ্রামবাসীরা তাঁকে গালিগালাজ করে। পরে পঞ্চায়েত সদস্যের উদ্যোগেই গ্রামের জঙ্গলে আবর্জনাময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খোলা আকাশের নীচে ত্রিপল টাঙিয়ে তাঁর নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করা হয়।

প্রসঙ্গত, দিন কয়ে আগে কোলাঘাটের সিদ্ধায় পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়ারান্টিন সেন্টারে রাখা নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বচসা থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। এ ছাড়া নন্দকুমারে এক পরিযায়ী শ্রমিককে মারের চোটে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। অশোক বেরা নামে ওই পরিযায়ী শ্রমিকও মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে বাড়িতে নিভৃতবাসে ছিলেন। প্রতিবেশীদের অভিযোগ ছিল, নিভৃতবাসের নিয়ম না মেনেই ওই যুবক যত্রতত্র ঙঘোরা ফেরা করছিলেন। এ নিয়ে তাঁকে সতর্কও করা হলেও তিনি শোনেননি। ফের তাঁকে সতরর্ক করতে গেলে তা নিয়ে দু’তরফে বচসা হাতাহাতি হয়। অভিযোগ তখনই প্রতিবেশীদের মারে ওই পরিযায়ী যুবক গুরুতর জখম হন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

নিভৃতবাসে থাকা পূর্ণচন্দ্র বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে বাড়িতে উপযুক্ত ঘর না থাকায় স্কুলে থাকতে চেয়েছিলাম। পঞ্চায়েত সদস্য আমাকে থাকতে বাধা দেন। জঙ্গলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মশার কামড়, সাপের আতঙ্ক নিয়েই রাত কাটাতে হচ্ছে তাঁবুতে। অবিলম্বে যাতে অন্যত্র কোনও সুরক্ষিত জায়গায় আমার থাকার ব্যবস্থা করা হয় তার জন্য প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’

বিজেপির দাবি, পরিযায়ী যুবক তাদের সমর্থক হওয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাকে এ ভাবে হেনস্থা ও বঞ্চিত করা হয়েছে। কাঁথি সাংগঠনিক বিজেপির সম্পাদক কৌশিক মণ্ডল বলেন, ‘‘পরিযায়ী ওই যুবক বিজেপির সমর্থক হওয়ার জন্য উদেশ্যেপ্রণোদিত ভাবে তাঁকে জঙ্গলে অস্বাস্থ্যকর জায়গায় রাখা হয়েছে। আমরা দলীয় ভাবে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

নিভৃতবাসে থাকা পূর্ণচন্দ্র বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে বাড়িতে উপযুক্ত ঘর না থাকায় স্কুলে থাকতে চেয়েছিলাম। পঞ্চায়েত সদস্য আমাকে থাকতে বাধা দেন। জঙ্গলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাঁবুতে আমার থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অবিলম্বে যাতে অন্যত্র কোনও সুরক্ষিত জায়গায় আমার থাকার ব্যবস্থা করা হয় তার জন্য প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’

কাঁথি সাংগঠনিক বিজেপির সম্পাদক কৌশিক মন্ডল জানান ‘পরিযায়ী যুবক বিজেপির সমর্থক হওয়ার জন্য উদেশ্যে প্রণোদিত ভাবে তাকে জঙ্গলের অস্বাস্থ্যকর জায়গায় রাখা হয়েছে। আমরা দলীয় ভাবে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য প্রতিমা করণ বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। গ্রামবাসীরাই ওঁকে থাকতে বাধা দেয়।’’

জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান উদয়শঙ্কর সর বলেন, ‘‘বিষয়টি জানার পরে ওই যুবককে জঙ্গলের তাঁবু থেকে নিরাপদ জায়গায় সরানোর ব্যবস্থা চলছে। বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উস্কানিমূলক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Egra Migrant worker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE