সদ্য জেলা শহর হয়েছে ঝাড়গ্রাম। তারপরেও যে রাতের শহরে ওষুধ খুঁজতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতা হবে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। ঝাড়গ্রাম থানার মানিকপাড়া পঞ্চায়েতের মালিখাল গ্রামে থাকি আমি। পেশায় রাঁধুনি। বাবা বছর পঁয়ষট্টির রঞ্জিত দাস গত ৫ এপ্রিল থেকে বুকে ব্যথা নিয়ে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি। রবিবার রাতে রাউন্ডে এসে চিকিত্সক বাবার জন্য একটি ওষুধ লিখে যান। কিন্তু ‘নরট্রিপটোমার-পি’ ওষুধটি হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের দোকানে ছিল না। বাধ্য হয়েই মাঝরাতে শহরের রাস্তায় বেরোলাম ওষুধের দোকান খুঁজতে।
পৌনে বারোটা নাগাদ রাস্তার মোড়ে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে দেখে জানতে চাইলাম কোথায় দোকান খোলা পাব। জানা গেল, রূপছায়া মোড়ে ভূপতি দত্ত মেডিক্যাল সারা রাত খোলা আছে। দেখি দোকান বন্ধ। বন্ধু প্রদীপ মাহাতোর সহযোগিতায় ওই দোকানের মালিকের বাড়িতে গেলাম। এক মহিলা জানালেন, “আজ দোকান খোলার কথা নয়।”
তারপর প্রদীপদার বাইকেই গেলাম ‘বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে’র ঝাড়গ্রাম জোনাল সম্পাদক কাশীনাথ দত্তের দোকান-লাগোয়া বাড়িতে। রাত তখন ১টা। পাঁচিল টপকে ডাকাডাকি করলাম। কাশীবাবু ওষুধ খুঁজলেন। তবে ওষুধটি ছিল না। হাসপাতাল মোড়ের অগ্রবাল মেডিক্যালের মালিক সুমিত অগ্রবালকে ফোনে অনুরোধ করলেন প্রদীপদা। সুমিতবাবুর থেকে ১৮০ টাকার ওষুধ কিনে ফিরলাম।
বাবা এখন অনেকটাই সুস্থ। তবে গত শুক্রবার রাতে বাবার পাশের শয্যার এক রোগীর পরিজনদের এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ওই রোগী মারা গিয়েছেন। আমরা চাই এমন অভিজ্ঞতা যেন আর কারও না হয়।
লেখক রোগীর ছেলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy