—ফাইল চিত্র।
২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর প্রায় প্রতি বছরই জেলা সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে জেলায় নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর পর্যটন কেন্দ্রের পরিকাঠামো সহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এ ছাড়াও রাস্তা, বিদ্যুৎ, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, কৃষক বাজার সহ একাধিক উন্নয়ন হয়েছে। দিঘায় আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার-সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও উন্নয়ন কাজের পর্যালোচনা বৈঠক করতে ফের দিঘায় পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কিন্তু লোকসভা ভোটে জেলায় শাসক দলের আসন অক্ষত থাকলেও ক্রম?শ বিজেপির উত্থান এবং কাটমানি নিয়ে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন সেদিকেই তাকিয়ে জেলাবাসী ও রাজনৈতিক মহল।
সদ্য লোকসভা ভোটে জেলায় তমলুক ও কাঁথি দুই কেন্দ্রে জয় এলেও গতবারের চেয়ে ব্যবধান অনেক কমেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার প্রায় সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ আসনে জিতলেও লোকসভা নির্বাচনে যে আশানুরূপ ফল হয়নি, তা মানছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলায় প্রধান বিরোধী হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। যে খেজুরি, নন্দীগ্রাম থেকে জেলায় তৃণমূলের জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই খেজুরিতে তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধী বিজেপির ভোটের ব্যবধান নেমে এসেছে মাত্র ৭ হাজারে। এগরা ও পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের চেয়ে এগিয়ে বিজেপি । এছাড়াও তমলুক, পাঁশকুড়া পূর্ব সহ জেলার অধিকাংশ বিধানসভা কেন্দ্রে গত বিধানসভা নির্বাচনের চেয়ে এবার ভোটের ব্যবধান কমেছে । লোকসভা ভোটে এমন খারাপ ফলের সঙ্গে জেলায় শাসকদলের বিড়াম্বনা বাড়িয়েছে কাটমানি ইস্যু।
তমলুক, শহিদ মাতঙ্গিনী, কোলঘাট, চণ্ডীপুর, পাঁশকুড়া, ময়না, নন্দীগ্রাম, মহিষাদল, হলদিয়ায় তৃণমূলের বেশ কিছু নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে পোস্টার পড়েছে। বাদ যাননি শাসক দলের বিধায়কও। যা নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়েছে। এই সব ঘটনায় জেলায় রীতিমত অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা। তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন যজ্ঞের যে ছোঁয়া জেলার মানুষ পেয়েছিলেন তাকে অনেকটাই দুর্বল করে দিয়েছে জেলার নেতৃত্বের একাংশের দুর্নীতি। রাস্তার নামে, আবাস যোজনায় ঘর তৈরিতে, চাকরি দেওয়ার নামে, ক্লাবকে দেওয়া অনুদান থেকে যে ভাবে নেতাদের বিরুদ্ধে বার বার কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তা মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন দিয়ে জেলার মানুষকে কাছে টানার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বড় বাধা। এখন দেখার সেই বাধা দূর করতে মুখ্যমন্ত্রী কী নিদান দেন!
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি (তমলুক) নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মানুষের সমস্যা জানতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি পালন করছেন। আমরা চাই জেলার যে সব নেতারা কাটমানি নিয়েছে বলে সাধারণ মানুষ অভিযোগ করছেন, সেইসব নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিক তাঁর সরকার।’’
মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সফরে এলেও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জেলায় দলের সাংগাঠনিক বিষয়ে আলোচনা হবে বলে মানছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় দলের সংগঠন বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী আলাদাভাবে আলোচনা করবেন। সেখানে সাম্প্রতিক কর্মসূচি সহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy