পাকা কালভার্ট দূরঅস্ত। পুর এলাকায় এ ভাবেই পেরোতে হচ্ছে জলা। নিজস্ব চিত্র
সাপের উপদ্রব আর নোংরা জল নিত্যদিনের সঙ্গী। যে ঢালাই রাস্তার সঙ্গে গ্রামীণ এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ, তাতে উঠতে গেলে জলা পেরোতে ভরসা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো। কোনও গ্রামের পরিচিত দৃশ্য নয়, এটা হলদিয়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ছবি।
পুর এলাকা হলেও ২ নম্বর ওয়ার্ডের ধনবেড়িয়া গ্রামের ছবিটা পুরসভার পরিকাঠামোর দুর্দশাকেই স্পষ্ট করে। অভিযোগ, প্রায় ২ বছর ধরে এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন গ্রামের মানুষ। সমস্যার সমাধান চেয়ে পুরসভার কাছে গ্রামবাসীরা আবেদনও জানিয়েছেন। কিন্তু ফল মেলেনি। ঢালাই রাস্তায় উঠতে গেলে পেরোতে হয় সাঁকো। বৃষ্টি নামলেই জল উঠে আসে সাঁকোর উপরে। নোংরা জল মাড়িয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চর্মরোগের শিকার হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। তার উপর রয়েছে এলাকায় সাপের উপদ্রব। মাস কয়েক আগে এলাকার এক কিশোরীকে সাপে কামড়ায়। তার পরেও পরিস্থিতির উন্নতিতে পুরসভার কোনও উদ্যোগ নজরে পড়েনি বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য ওই এলাকায় একটি নালা তৈরির কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। গ্রামের সামনের দিকে নীচু জমিতে মাটি ভরিয়ে পাশাপাশি দোকান এবং বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাতেই হয়েছে বিপত্তি। নিচু জায়গায় মাটি ফেলে উঁচু করে দেওয়ায় জল বের হওয়ার জায়গা পাচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবেই জমা জলে আবর্জনা পচে দুর্গন্ত ছড়ানোর পাশাপাশি ছড়াচ্ছে দূষণ। গ্রামের চাষ যোগ্য জমি হোগলাবনে পরিণত হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাউন্সিলরকে বার বার বলেও কাজ হয়নি। গৃহবধূ মিঠু দাস অধিকারী বলেন, ‘‘খাবার জলটা বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়। আর অন্যান্য কাজে পচা জলই ভরসা। যার ফলে এলাকার অনেকেই চর্মরোগে ভুগছেন। মিঠু দাসের মতো অনেকেরই প্রশ্ন, কোটি কোটি টাকা খরচা করে হলদিয়া মেলা করা, মোটা টাকা মাইনে দিয়ে পুরপ্রধান উপদেষ্টা রাখা সবই কাজেই টাকার সংস্থান হয়ে যায়। কেবল পুরবাসীর উন্নয়নের জন্য কিছুই বরাদ্দ হয় না!
সমস্যার কথা স্বীকার করে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সর্বাণী মাজি বলেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে বোর্ড মিটিংয়ে ওই নিকাশি পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়ে গেলেও কাজ আর শুরু হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে।’’ পুরপরিষদ (নিকাশি) নারায়ণ প্রামাণিক বলেন, ‘‘করোনা ও লকটাউনের কারণে আর্থিক সমস্যা থাকায় কাজ শুরু করা যায়নি। তবে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, পুরসভার পক্ষ থেকে তা দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy