নথিপত্র উধাও। আর জেরেই বাতিল হয়ে গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের জামবনি ব্লকের পঞ্চায়েতগুলিতে সহায়ক নিয়োগ প্রক্রিয়া। প্রায় দেড় দশক ধরে এই নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা চলছিল। শেষমেশ জেলা প্রশাসন তা বাতিল করে দেওয়ায় প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে।
জামবনি ব্লকে মোট ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েতপিছু একজন করে সহায়ক নিয়োগের জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল সেই ২০০০ সালে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এরপরই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ওঠে। কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এবং জামবনির একাংশ বাসিন্দা অভিযোগ তোলেন, এ ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। জেলা প্রশাসন তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই মতো মহকুমাস্তরে তদন্ত শুরুও হয়। দেখতে দেখতে একের পর এক বছর গড়িয়ে যায়। তবে সুরাহা হয়নি। শেষে রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে জামবনি ব্লক অফিসে এক চিঠি পাঠানো হয়। নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র চেয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু সেই নথি মেলেনি।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গত কয়েক মাস ধরে জামবনি ব্লক অফিস এবং পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে তন্নতন্ন করে নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র খোঁজার চেষ্টা হয়েছে। তবে লাভ হয়নি। নথিপত্র না মেলার রিপোর্ট ব্লক, মহকুমায় ঘুরে জেলায় আসে। তারপরই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল বলে ঘোষণা করে দেয় জেলা প্রশাসন। প্রক্রিয়া বাতিলের কথা সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েও দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা। জেলাশাসক মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, জামবনিতে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়েছে। ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতোরও বক্তব্য, “প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। তাই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়েছে।’’
ঠিক কী কী নথি চাওয়া হয়েছিল?
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, লিখিত পরীক্ষার ও মৌখিক পরীক্ষার ফল, চূড়ান্ত প্যানেল প্রভৃতিই ব্লক অফিস থেকে চাওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, এই নিয়োগ সংক্রান্ত অন্য কোনও কাগজপত্র যদি থেকে থাকে তাও জেলায় পাঠাতে বলা হয়েছিল। এরপরই জামবনি বিডিও অফিস এবং পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে তন্নতন্ন করে নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র খোঁজার চেষ্টা হয়েছে। তবে চেষ্টা বৃথাই গিয়েছে। জেলার এক প্রশাসনিক কর্তার মন্তব্য, “নিয়োগ সংক্রান্ত সব কাগজ কী ভাবে উধাও হয়ে গেল বোঝা যাচ্ছে না!’’
কী ভাবে নথিপত্র উধাও হল তার তদন্ত হবে না? ওই প্রশাসনিক কর্তার জবাব, ‘‘আপাতত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। সব দিক
খতিয়ে দেখে পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy