Advertisement
১১ মে ২০২৪
Ambulance

ভাড়া গুনেও মিলছে না অ্যাম্বুল্যান্স, পথে দেরি

করোনা আক্রান্তদের সূত্রে ঘাটাল-দাসপুরে এখন ৬০টির বেশি কন্টেনমেন্ট এলাকা রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারাই সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২০ ০৭:৫৬
Share: Save:

শুধু করোনা আক্রান্তই নয়, অ্যাম্বুল্যান্স ও গাড়ি না পেয়ে প্রসূতি-সহ অন্য রোগীরাও আতান্তরে পড়েছেন।

কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোম থেকে ‘রেফারে’র পরেও সেখানেইঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাঁদের। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি-সহ মহকুমার বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বেশি ভাড়া দিতে দিতে চাইলেও মিলছে না গাড়ি। এপ্রিলের গোড়ার দিকে ঘাটাল শহরের এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক করোনা পজ়িটিভ হয়েছিলেন। তারপর থেকেই অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের অনেকেই গাড়ি কম বের করছেন। লকডাউন শিথিল হওয়ার পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।

করোনা আক্রান্তদের সূত্রে ঘাটাল-দাসপুরে এখন ৬০টির বেশি কন্টেনমেন্ট এলাকা রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারাই সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন। ঘাটালের ইড়পালার এক তরুণীর অভিযোগ, “ক’দিন আগে ঘাটাল হাসপাতালে যাওয়ার জন্য মাতৃযান চালককে ফোন করেছিলাম। আমার কন্টেনমেন্ট এলাকায় বাড়ি শুনেই তিনি ফোন কেটে দিলেন!” দাসপুরের বাসিন্দা এক আশা কর্মীরও ক্ষোভ, ‘‘সাধারণ অ্যাম্বুল্যান্স দূরের কথা, ঘাটাল মহকুমার কন্টেনমেন্ট এলাকায় মাতৃযানও যাচ্ছে না।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জেলা জুড়ে প্রসূতিদের জন্য মাতৃযান বা নিশ্চয়যান পরিষেবা চালু আছে। এছাড়া রাজ্য সরকারের তরফেও ‘মাতৃযান ১০২’ পরিষেবা রয়েছে। ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটিতে ১৫টি, বীরসিংহ, দাসপুর, সোনাখালি, ক্ষীরপাই ও চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ৫-৬টি করে মাতৃযান রয়েছে। সেগুলি যাতে স্বাভাবিক পরিষেবা দেয় তার জন্য চেষ্টা চলছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “পরিস্থিতির উপরে নজর রয়েছে। মাতৃযানের কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে সাধারণ রোগীদের ক্ষেত্রে গাড়ির সমস্যা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল থেকেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।”

বাস্তবে অবশ্য হাসপাতাল বা নার্সিংহোম থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করতে অনেকটাই সময় চলে যাচ্ছে। তার জন্য হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘জরুরি হলেও রোগী রেফার করতে ভয় লাগছে। কারণ গাড়ির সমস্যা। হাসপাতালের রোগী শুনলেই অনেক চালক এড়িয়ে চলছেন।”

কেন এই অবস্থা? ঘাটাল শহরের বাসিন্দা খোকন ঘোরুই নামে এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে ভাড়া এলেও যাচ্ছি না। আতঙ্ক কাজ করছে।’’ অ্যাম্বুল্যান্স মালিকদের দাবি, সরকারের উচিত তাঁদের পাশে দাঁড়ানো। অল বেঙ্গল নিশ্চয়যান অ্যাম্বুলেন্স অপারেটরস্ ইউনিয়নের রাজ্য কার্যকরী সভাপতি অনুপম নায়েক বলেন, ‘‘চালক, কর্মীদের পিপিই, মাস্ক আমাদের দিতে হচ্ছে। গাড়ি জীবাণুমুক্তও করতে হচ্ছে। সরকার এগুলির ব্যবস্থা করলে ভাল হয়। আমরা তো সরকারি পরিষেবাই দিচ্ছি। সরকারের উচিত আমাদের সুবিধা- অসুবিধা দেখা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ambulance Ghatal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE