ভস্মীভূত: আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দু’টি দোকানের একটি। নিজস্ব চিত্র
রাতের অন্ধকারে পুড়ে ছাই হয়ে গেল পরপর দু’টি দোকান। শনিবার বেলদার নন্দ মার্কেট এলাকার এই অগ্নিকাণ্ড ফের বুঝিয়ে দিল দমকল কেন্দ্র দূরে হওয়ার কী সমস্যা।
ঘিঞ্জি এই বাজার এলাকায় রয়েছে প্রায় ছ’শো দোকান রয়েছে। শনিবার রাত ১২টা নাগাদ প্রথমে একটি কাপড়ের দোকানে আগুন লাগে। দ্রুত তা ছড়ায় পাশের দশকর্মা দোকানে। আশপাশের ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে যান। খবর দেওয়া হয় থানায়। সেখান থেকে খবর যায় দমকলে। কিন্তু ৪০ কিলোমিটার দূরের দমকল স্টেশন থেকে কতক্ষণে ইঞ্জিন এসে পৌঁছবে, সেই ভরসায় অবশ্য হাত গুটিয়ে থাকেননি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। আগুন নেভানোর চেষ্টার পাশাপাশি দোকানের মালপত্র সরানোর চেষ্টাও হয়। তবে তাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। শেষে রাত আড়াইটে নাগাদ খড়্গপুর থেকে পৌঁছয় দমকলের একটি ইঞ্জিন। পরে এগরা থেকেও আরও একটি ইঞ্জিন আসে। ততক্ষণে অবশ্য ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে দু’টি দোকানই।
ওড়িশার প্রবেশদ্বার বলে পরিচিত বেলদা বরাবরই বাঙালি, ওড়িয়া, মারোয়াড়ি, গুজরাতি ব্যবসায়ীদের শক্ত ঘাঁটি। এই এলাকায় নন্দ মার্কেট, নতুন বাজার, কোটিপতি বাজার, মেইন রোড মার্কেট, স্টেশন রোড বাজার, সুভাষপল্লি এলাকায় প্রতিদিন কোটি-কোটি টাকার কারবার চলে। অথচ দমকলের স্টেশন বলতে ৪০কিলোমিটার দূরে খড়্গপুর বা ৩৫কিলোমিটার দূরে এগরা। ফলে, আগুন লাগলে তড়িঘড়ি নেভানোর কোনও উপায় নেই। যেমনটা ঘটেছে নন্দ মার্কেটে। মন্টু সাহুর কাপড়ের দোকান ও সুভাষ সাহুর দশকর্মা দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে।
মন্টুবাবু বলছিলেন, “ঝড়-বৃষ্টি র জন্য সাড়ে দশটায় দোকান বন্ধ করে দিয়েছিলাম। রাত ১২টা নাগাদ সিভিক ভলেন্টিয়াররা ধোঁয়া দেখেন। সম্ভবত শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছিল। আড়াই ঘন্টা পরে দমকল এল। ততক্ষণে চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল দু’টি দোকান।” দূরের পথ হওয়াতেই যে পৌঁছতে দেরি হয়েছে, তা মানছেন খড়্গপুরের দমকলের ওসি নির্মল মুর্মুও। তিনি বলেন, “থানার ওসি ফোন করার পরেই আমাদের ইঞ্জিন রওনা দিয়েছিল। অনেকটা পথ যেতে সময় তো লাগবেই।”
এক সময়ে বেলদায় দমকল স্টেশন গড়ার দাবি তুলেছিলেন ব্যবসায়ীরা। তৎপরতা শুরু হলেও পরে কাজ আর এগোয়নি। শনিবারের অগ্নিকাণ্ডের পরে ফের দমকল স্টেশন চাইছেন বেলদার ব্যবসায়ীরা। বেলদা ফেডারেশন অফ ট্রেডার্স অর্গানাইজেশনের সহ-সম্পাদক রাজু চাণ্ডক বলেন, “এখানে এত দোকান। একবার আগুন লাগলে সব পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। এখানে দমকল স্টেশন খুব জরুরি।”
এ প্রসঙ্গে জেলার ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার দীপঙ্কর পাঠকের বক্তব্য, “আমরা পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে ৪টি দমকল স্টেশন দ্রুত চালু করব। বেলদা-নারায়ণগড়ের জন্যও প্রস্তাব পাঠিয়েছি। জমি দেখা হচ্ছে। জমি পেলেই ওখানে দমকল স্টেশন হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy