আলো রয়েছে। তবে নজরদারির অভাবে রাত হলেই মদ-গাঁজার আসর বসে বলে অভিযোগ। ঘাটাল হাসপাতাল চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।
চিকিৎসা নিয়ে রোগীদের অসন্তোষ। তার জেরে গালিগালাজ, হুমকি থেকে শুরু করে মারধর— এসব ঘটনা ঘটেছে ঘাটাল হাসপাতালেও। এমনটাই অভিযোগ চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের। তাই খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের পর প্রশাসনের কাছে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।
শুধু কী নিরাপত্তা! মহকুমা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চারপাশের পরিবেশ নিয়েও ক্ষুব্ধ চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত একাংশ।
অভিযোগ, এমনিতেই ঘাটাল হাসপাতালে মদ খেয়ে অনেকেই মাঝে মধ্যে হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতর ঘুরে বেড়ায়। রোগীর পরিজন পরিচয় দিয়ে কর্তব্যরত নার্সদের গালিগালাজ করার অভিযোগও বহুদিনের। গভীর রাতে সমস্যা আরও বাড়ে। নিরাপত্তারক্ষী কম। রাতে সে সংখ্যা আরও কমে যায়। মাঝে মধ্যে রোগীদের কোনও সমস্যা বা অঘটন ঘটলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেয়। ভাঙচুর, মারধরের ঘটনা ঘটে।
গত ৮ মে গাফিলতিতে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। তাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক-নার্সদের মারধর করা হয়। ভাঙচুর করা হয় হাসপাতালে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, একসময় হাসপাতালের গুদামে আত্মগোপন করেছিলেন চিকিৎসক-নার্সরা। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, এত বড় না হলেও হুমকি-গালিগালাজ হাসপাতালে লেগেই রয়েছে। চিকিৎসক নিগ্রহের জেরে ঘাটাল হাসপাতালে এক চিকিৎসকের চাকরি থেকে ইস্তফার নজিরও আছে। ক’দিন আগেই খড়্গপুরে চিকিৎসক নিগ্রহ এবং তাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া পরিস্থিতি সাড়া ফেলেছে গোটা জেলায়। তাই আরও একবার নিরাপত্তার প্রশ্নে সরব হয়েছেন ঘাটাল হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা।
এক চিকিৎসক বললেন, ‘‘পান থেকে চুন খসলেই আমাদের মার খেতে হচ্ছে। গাঁজা-মদ খেয়ে হাসপাতালে সব ঘুরে বেড়ায়। নিরাপত্তার বালাই নেই।” এক নার্সের কথায়, ‘‘এতবড় ক্যাম্পাস। ডিউটি করতে এসে সন্ধ্যার পর হাসপাতালের ভিতরে একা একা ঘুরতেও ভয় হয়। গাঁজা-মদ খেয়ে এখানে-অনেকে অনেকেই ঘুরে বেড়ায়। প্রতিবাদ করলে গালমন্দও শুনতে হয়।’’ আরেক নার্স বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ সবই জানেন। কিন্তু পরিস্থিতি বদল হচ্ছে না।”
হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাটা ঠিক কেমন? এখানে স্থায়ী কোনও পুলিশের ক্যাম্প নেই। হাসপাতালের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীও পযার্প্ত নয়। পযার্প্ত সিসি ক্যামেরাও নেই। যেখানে ক্যামেরা আছে সেগুলিও ঠিকঠাক নজরদারি হয় না বলে অভিযোগ। ঘাটালে একই ক্যাম্পাসে মহকুমা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। প্রতিদিন গড়ে তিনশো-সাড়ে রোগী ভর্তি থাকেন। অভিযোগ, পুলিশি নজরদারি সেরকম না থাকায় সন্ধ্যার পর মহিলাদের লক্ষ্য করে কটূক্তিও বাড়ছে। হাসপাতালের ফাঁকা জায়গা দখল করে বসে তাসের আড্ডা। সেখানেই চলে গাঁজার আসর। হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বললেন, “বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীর সংখ্যা বাড়ানোর কথা স্বাস্থ্য ভবনে জানিয়েছি। স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের কথাবার্তাও চলছে। ঘরও তৈরি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy