ছবি পিটিআই।
অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন এত ‘রেফার’? জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে।
মুখ্যমন্ত্রীর অসন্তোষ প্রকাশের দু’দিনের মধ্যে ঝাড়গ্রাম জেলার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জোড়া বদল হল। মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি এবং ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার মলয় আদককে সরিয়ে দেওয়া হল। শুক্রবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে নির্দেশ জারি করে এই বদলির কথা জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য প্রশাসনের দাবি, এটা রুটিন বদলি। যদিও প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, সম্প্রতি আসন্ন প্রসবা এক তরুণীকে মাঝরাতে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এই জোড়া বদলি তারই জের বলে অনুমান, ওই আধিকারিকদের।
ঝাড়গ্রামের নতুন সিএমওএইচ হচ্ছেন প্রকাশ মৃধা। তিনি উত্তর দিনাজপুরের সিএমওএইচ ছিলেন। অশ্বিনীকে কলকাতা মেট্রোপলিট্যান আরবান অর্গানাইজেশনের (কেএমইউএইচও) সহ অধিকর্তা পদে পাঠানো হল। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটির সুপার মলয়কে উত্তর দিনাজপুরের জোনাল লেপ্রোসি অফিসার পদে বদলি করা হল। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটির নতুন সুপার হচ্ছেন ইন্দ্রনীল সরকার। ইন্দ্রনীল সরকার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের এসিএমওএইচ পদে ছিলেন।
গত ৬ সেপ্টেম্বর দু’টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ফিরিয়ে দেওয়ায় সঙ্কটজনক তনিমারানি দাস নামে এক অন্তঃসত্ত্বার প্রসব হয়েছিল বেসরকারি নার্সিংহোমে। বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে ঝাড়গ্রাম জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দু’টি হাসপাতালের দু’জন চিকিৎসককে শো-কজ করা হয়েছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে ঝাড়গ্রামে আসেন মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের মনিটরিং অ্যান্ড গ্রিভান্স সেল-এর উপদেষ্টা কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী। নার্সিংহোমে গিয়ে সেদিন দীপ্তাংশু দেখা করেন তনিমার সঙ্গে। তনিমার এই হয়রানির জন্য হাত জোড় করে মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে দুঃখপ্রকাশ করে দীপ্তাংশু সেদিন জানিয়েছিলেন, কড়া পদক্ষেপ করা হবে। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনীকে দাঁড় করিয়ে বলেছিলেন, ‘‘সবাইকে যদি রেফার করে দেন, তাহলে মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি তৈরি হয়েছে কী জন্য? আপনাদের মায়াদয়া নেই?’’
৬ সেপ্টেম্বর রাতে গোপীবল্লভপুরের ভোলামহুলি গ্রামের তনিমারানিকে ঝাড়গ্রামে রেফার করেন গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখানে অ্যানাস্থেটিস্ট অসুস্থ থাকায় তনিমার সিজার হয়নি। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিমাংশু রায় তনিমাকে দেখতেই চাননি বলে অভিযোগ। গোপীবল্লভপুরে সিজারের পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও কেন তনিমাকে রেফার করা হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে ওই চিকিৎসক তনিমাকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে রেফার করেন বলে অভিযোগ। তনিমার অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক হওয়ায় ঝাড়গ্রামের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। সেখানে একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন তনিমা। তনিমার স্বামী রঞ্জিত দাসের অভিযোগ পেয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
তদন্ত চলছে। তারই মধ্যে ঝাড়গ্রাম স্বাস্থ্য প্রশাসনে হল জোড়া বদলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy