ফাইল চিত্র
নিজের বিধানসভা এলাকায় গিয়েও ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচিতে যোগ দেননি তিনি। শনিবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী ব্যস্ত ছিলেন শহিদ স্মরণে। আর তাঁর বিধানসভা প্রতিনিধি হিসেবে শনিবারই ওই জনসংযোগ কর্মসূচি সেরেছেন মেঘনাদ পাল।
এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নিজের খাসতালুক কাঁথিতে দাঁড়িয়ে মেদিনীপুরবাসীর আত্মমর্যাদার ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে দিলেন শুভেন্দু। বললেন, ‘‘নীতিতে বিশ্বাস করি। কিন্তু কখনওই আত্মমর্যাদা হারাতে পারবেন না।’’ এ দিন শুভেন্দু স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘ওরা ভেবেছিল কলকাতার রাজনীতিতে আমাকে চলতে হবে। যারা রাজনীতিতে জনবিচ্ছিন্ন, তাদের কথা শুনে আমাকে রাজনীতি করতে হবে। আমি স্বাধীনচেতা। নিজের মতো রাজনীতি করি।’’
রবিবার বিকেলে কাঁথিতে পুরসভার নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মিসভা ডেকেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে প্রধান বক্তা ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ ও সেচ মন্ত্রী শুভেন্দু। মেদিনীপুরবাসীর মাথা হেঁট না করার ঐতিহ্য প্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের কথা, যিনি মাথা নত করবেন না বলে দাঁড় করিয়ে শেষকৃত্য করা হয়েছিল। শুভেন্দু বলেন, ‘‘কলকাতায় এক জোড়া জুতো ছেড়ে দিয়ে এসেছিলেন দেশপ্রাণ। অন্তিম যাত্রায় দাঁড় করিয়ে তাঁর শেষকৃত্য করতে হয়েছিল। মেদিনীপুরের সেই ঐতিহ্য কখনও বিসর্জন দিতে পারবেন না।’’
বস্তুত, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সহযোগিতায় তৃণমূলের জনসংযোগ কর্মসূচি থেকে নিজেকে সরিয়েই রাখছেন শুভেন্দু। প্রথমে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি তিনি নিজের বিধানসভা ক্ষেত্র নন্দীগ্রামে করেননি। ‘বাংলার গর্ব মমতা’র দায়িত্বও দিয়েছেন বিধানসভা প্রতিনিধির ঘাড়ে। খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন দ্বিতীয় এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন, সে দিনও কলকাতার সভায় শুভেন্দু-সহ অধিকারী পরিবারের কেউ হাজির ছিলেন না। এ সব নিয়ে বিস্তর জল্পনার মধ্যেই এ দিন শুভেন্দুর মাথা হেঁট না করার বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
এ দিনের কর্মিসভায় শুভেন্দু ছাড়াও ছিলেন স্থানীয় সাংসদ তথা পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী, সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, কাঁথির পুরপ্রধান সৌমেন অধিকারী। মঞ্চ থেকে শুভেন্দু ঘোষণা করেন, ‘‘কাঁথিতে পুরভোট যে দিন হোক, প্রার্থী যেই হোন, রণকৌশল ঠিক তখনই চূড়ান্ত হবে। এ ব্যাপারে এখন থেকে কিছু বলা হবে না।’’
তবে কাঁথি যে ‘অধিকারী গড়’ তা এ দিন ফের পরোক্ষে বুঝিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। বলেছেন, ‘‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী কিংবা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু কাঁথিতে সভা করেও কিছুই করতে পারেনি।’’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তিনটি পুরসভার ভোটে দলের প্রার্থী কারা হচ্ছেন, তা চূড়ান্ত হওয়ার পরে তিনি নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy