Advertisement
১১ মে ২০২৪

দ্বন্দ্বে শুভেন্দুর সোশ্যাল দাওয়াই

এক মাস ১০ দিন অসমাপ্ত থাকা বৈঠক শেষ করতে শনিবার সন্ধ্যায় খড়্গপুরে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০০:২৮
Share: Save:

পান থেকে চুন খসলেই হল। রেলশহরে তৃণমূলের যুযুধান নেতাদের সাঙ্গোপাঙ্গরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পরস্পরকে বিঁধতে কসুর করেন না। আর তাতে বেআব্রু হয়ে পড়ে দলের বিভাজন। দলে ঐক্য ফেরাতে তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্যে রাশ টানার দাওয়াই দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

এক মাস ১০ দিন অসমাপ্ত থাকা বৈঠক শেষ করতে শনিবার সন্ধ্যায় খড়্গপুরে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু। গত ১৬ জুন প্রথম দফার বৈঠকে ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। বাকি ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টির প্রতিনিধিদের নিয়ে শনিবার বসেন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি রেলশহরের তৃণমূল কর্মীদের সোশ্যাল মিডিয়া সংযত আচরণের নির্দেশ দেন।

তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহে দলের পাঁচ নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা যাতে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে দল বা ব্যক্তি বিরোধী মন্তব্য না করেন সেই নির্দেশ দিয়েছেন শুভেন্দু। সংযত না হলে প্রয়োজনে দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি সাইবার ক্রাইমের ধারায় মামলা রুজুর হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি মানছেন, “শুভেন্দুবাবু শহরের পাঁচ নেতা এবং কর্মীদের ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে দল বা ব্যক্তি বিরোধী মন্তব্য করতে নিষেধ করেছেন। যদি কেউ তা অমান্য করে তবে সেই কর্মীর বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে যেমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তেমনই সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ দায়ের করতে বলেছেন।”

পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, উপপুরপ্রধান শেখ হানিফ, তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে, শহর কার্যকরী সভাপতি জহরলাল পাল ও জেলা নেতা দেবাশিস চৌধুরী— খড়্গপুরে তৃণমূলের এই পাঁচ নেতাই শনিবার শুভেন্দুর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মূলত এঁদের দলাদলিই বিধানসভা জয়ের পর এ বার লোকসভা ভোটেও রেলশহরে তৃণমূলের বিপর্যয়ের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। লোকসভায় রেলশহরে ৪৫ হাজার ভোটে লিড পেয়েছে বিজেপি। খড়্গপুরে তৃণমূলের কোন্দল হামেশাই প্রকাশ্যে এসেছে। কখনও ছদ্মনামে, কখনও সরাসরি দলের নেতাদের নামে ফেসবুকে সরব হয়েছেন দলের কর্মীরা। বিশেষ করে পুরপ্রধান প্রদীপ ও তাঁর বিরোধী বলে পরিচিত দেবাশিসের অনুগামীদের বিরোধ ফেসবুকে প্রকাশ্যে এসেছে।

এই দ্বন্দ্বে রাশ টানতে শুভেন্দুর সোশ্যাল দাওয়াই নিয়ে শহরের কর্মীদের মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রদীপ বলেন, “শুভেন্দুদা কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন। আমরা খুশি। কিছু কর্মী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ সব করতেন। আশা করছি তাঁরা সংযত হবেন।” দেবাশিস অবশ্য দলীয় বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে বাইরে কথা বলতে চাননি। আর রবিশঙ্করের বক্তব্য, ‘‘আগে তো পদক্ষেপ কর‍তে হবে। তার পরে স্বস্তি মিলছে কি না দেখা যাবে। কারণ যাঁরা মন্তব্য করেন তাঁরা কারা, কাকে নিয়ে মন্তব্য করছেন সেটা আগে খুঁজে বের করতে হবে।’’

শুভেন্দুর বৈঠক অবশ্য শেষ হয়নি। বাকি ১০টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা বাকি রয়েছে, আগামী ১০ অগস্ট তাঁদের নিয়ে শুভেন্দু ফের বৈঠকে বসবেন বলে ঠিক হয়েছে। ২০ অগস্ট রেলের বিরুদ্ধে ডিআরএম অফিসের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিও নিয়েছে তৃণমূল। সেখানেও থাকার কথা শুভেন্দুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Social Media Suvendu Adhikary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE