তালাবন্ধ হয়ে পড়ে আছে দোকান। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। সেই ‘অপরাধে’ জুলমবাজি করে এক ব্যবসায়ীর দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এলাকায় বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত আরও কয়েক জন ব্যবসায়ীর দোকান। অভিযোগ, দোকান খুলতে হলে দাবি করা হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। তৃণমূলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরাই এর পিছনে বলে অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।
এগরা মহকুমার পটাশপুর-১ ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মনসাতলা ও হাট গোপালপুরে তিন মাস ধরে আটটি দোকান বন্ধ থাকার ওই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মনসাতলা এবং হাট গোপালপুর গ্রামে খালের ধারে সেচ দফতরের অধীনে দোকানগুলি তৈরি হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই তাঁদের হুমকি দিতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, গত ২২ মে সকালে কয়েকজন দুষ্কৃতী জোর করে দোকানে ঢুকে তাঁদের টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করে দোকানে তালা দিয়ে দেয়। দোকান খুলতে হলে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে তারা। এই অবস্থায় ব্যবসার জিনিসপত্র এখনও দোকানে তালাবন্দি অবস্থায় পড়ে। রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ওই ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, বার বার পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি। শুধু আশ্বাসই জুটেছে।
ওই ব্যবসায়ীদের একজন শঙ্করপ্রসাদ ভঞ্জ পঞ্চায়েত ভোটে গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সৌলাভেড়ি বুথে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সেই ‘অপরাধে’ তাঁর দোকান-সহ পাশের অন্য বিজেপি সমর্থকদের দোকান বন্ধ করে দেয় তৃণমূলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা। দোকান খুলতে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে তারা। ঘটনার পরে থানায় গিয়ে পুলিশকে জানিয়েছিলাম। পুলিশ দোকান খুলে দেওয়ার জন্য আমাদের আশ্বস্ত করে। কিন্তু তারপর কিছু করেনি।’’ তিনি জানান, দু’মাস পরেও দোকান খোলার কোনও উপায় না দেখে ফের আরও একবার পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। কিন্তু কিছু হয়নি। বাধ্য হয়ে গত ৯ জুলাই ডাকযোগে থানায় অভিযোগ জানানো হয়। তাঁদের এটুকুই দাবি, দোকান খুলতে পুলিশ সাহায্য করুক। না হলে সংসার চলবে না।
গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সভাপতি প্রভুরাম দাস বলেন, ‘‘আমার কাছে দোকান বন্ধের কোনও খবর নেই। তবে অভিযোগ যখন উঠেছে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ পটাশপুর-১ বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গোবর্ধন দাসের কথায়, ‘‘আমরা প্রশাসনের কাছে বার বার সাহায্য চেয়েছি। ওঁরা আজ-কাল করে শুধু সময় কাটিয়েছেন। আমরা চাই অবিলম্বে ওই ব্যবসায়ীদের দোকান খুলতে ব্যবস্থা নিক পুলিশ-প্রশাসন।’’
পটাশপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে বিষয়টি জানার পরে ওই ব্যবসায়ীদের লিখিত অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছিল। পরে ওঁরা অভিযোগ জানিয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই বন্ধ দোকান খোলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy