Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি নিয়ে ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৃণমূলে

আগেও একাধিকবার মহিষাদল ব্লক সভাপতি তিলক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহিষাদল শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪০
Share: Save:

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতপুজোকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। স্থানীয় প্রধান ও উপপ্রধানের সঙ্গে সাথে ব্লক সভাপতির সঙ্গে নতভেদে জড়ালেন স্থানীয় প্রধান ও উপপ্রধান। স্পষ্টতই বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব।

দিন দুয়েক আগে মহিষাদল ব্লকের ইটা মগরা-২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বামুনিয়া গ্রামে প্রস্তাবিত মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত পুজো করে সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু হয়েছে। সেদিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি চক্রবর্তী ও সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী। তিনি মহিষাদল ব্লকের সভাপতিও। কিন্তু দেখা যায়নি স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধানকে। আর তা নিয়েই ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে সোস্যাল মিডিয়া নিজের ক্ষোভ উপরে দিয়েছেন ইটামগরা-২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রামকৃষ্ণ দাস। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত পুজোর অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত ছিলেন না আশপাশের কয়েকটি অঞ্চলের প্রধান এবং উপপ্রধানরা। দলীয় ব্লক সভাপতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এই কাজ করেছেন।’’ শুধু তাই নয়, ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে উপপ্রধান বলেছেন, ‘‘কাটমানি নেওয়ার জন্য আগে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব খাটাতে চাইছেন ব্লক সভাপতি।’’ প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ (এইচডিএ) যখন জমি অধিগ্রহণ করতে উদ্যোগী হয়েছিল, সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য রামকৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন অনেকে। পরে এইচডিএ স্থানীয়দের কাছ থেকে ২২০০ টাকা প্রতি ডেসিমাল হিসেবে ওই জমি কিনে নেয়। বর্তমান উপপ্রধান রামকৃষ্ণ দাসের পারিবারিক প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমিও তার মধ্যে রয়েছে।

পঞ্চায়েত প্রধান শম্পা কাঁপ বলেন, ‘‘আমাদের অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। অথচ প্রধান, উপপ্রধানরাই সেখানে ব্রাত্য। সংবাদমাধ্যমে ভিত পুজোর কথা জানতে হয়েছে। এটা বড়ই বেদনাদায়ক। আসলে ব্লক সভাপতির সঙ্গে প্রধান, উপপ্রধানরা হাজির থাকলে তাঁর গুরুত্ব কমে যেত। সেই কারণেই হয়তো মহিষাদল ব্লক সভাপতি আমাদের ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাননি।’’

সোস্যাল মিডিয়ায় তৃণমৃল নেতার সেই পোস্ট। নিজস্ব চিত্র

প্রসঙ্গত, আগেও একাধিকবার মহিষাদল ব্লক সভাপতি তিলক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টারও পড়েছিল। এই বিষয়ে তিলককে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ তবে তিনি কোনও কথা না বললেও এই ঘটনায় তৃণমূলের অন্দরে বিভেদের ছবি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। দলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা ছিল না।আপনার কাছ থেকে জানলাম। দলীয়ভাবে তদন্ত করে দেখা হবে।’’

কী বলছে বিরোধীরা?

বিজেপির তমলুক জেলা সাংগঠনিক সভাপতি নবারুণ নায়েকের কথায়, ‘‘তিলক চক্রবর্তী এর আগে স্নাতক স্তরে রাজ কলেজের কাটমানি খেয়েছেন। এখন আবার স্নাতকোত্তরেও সেই কাটমানি খেতে চাইছেন। অন্যরা অনুষ্ঠানে এলে তাদেরও কাটমানির ভাগ দিতে হবে। তাই তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

University TMC Group Conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE