Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘দিদিকে বলো’য় সুরাহা নেই, রাস্তা সারালেন ‘বোনে’রা

স্থানীয় সূত্রের খবর, পাঁশকুড়া শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁপাডালি-দাসপাড়া রাস্তাটি বহু পুরনো। অভিযোগ, সেটি বহুদিন সারানো হয়নি। বর্ষায় মোরামের রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে গিয়েছে।

রাস্তা মেরামতির কাজে হাত লাগিয়েছেন মহিলারা। নিজস্ব চিত্র

রাস্তা মেরামতির কাজে হাত লাগিয়েছেন মহিলারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫৪
Share: Save:

পুরসভা থেকে ‘দিদিকে বলো’— অভিযোগ জানানো হয়েছিল সব জায়গায়। কিন্তু কোথাও সমস্যার সুরাহা না হওয়ায় শেষেমেশ নিজেরাই রাস্তা সারালেন এলাকার মহিলারা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, পাঁশকুড়া শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁপাডালি-দাসপাড়া রাস্তাটি বহু পুরনো। অভিযোগ, সেটি বহুদিন সারানো হয়নি। বর্ষায় মোরামের রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে গিয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অন্য সমস্যা। সম্প্রতি বিবাদের জেরে স্থানীয় এক বাসিন্দা রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেন বলে অভিযোগ। ফলে প্রায় মাসখানেক রাস্তা বন্ধ ছিল। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য কিছুদিন আগে স্থানীয় মানুষজন পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্রের দ্বারস্থ হন। পুরপ্রধান বিবাদমান দুই পক্ষকে পুরসভায় ডেকে পাঠান বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য। অভিযোগ, ওই দিন উভয় পক্ষ পুরসভায় গেলেও নন্দ মিশ্র না থাকায় সেদিন কোনও আলোচনা হয়নি।

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, পুরসভায় সমস্যা সমাধান না হওয়ায় ‘দিদিকে বলো’র নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানান। দাবি, গত ১০ দিনে অন্তত ৩০ বার এ নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু এর পরেও প্রশাসনের তরফে কোনও সাড়া না পাওয়ায় বেড়া ভেঙে রাস্তা সারাতে উদ্যোগী হন এলাকার মহিলারা। শুক্রবার মহিলারা একত্রিত হয়ে ওই বাঁশের বেড়া ভেঙে দেন এবং পাশে মজুত করা মোরাম দিয়ে রাস্তাটি মেরামত করেন তাঁরা।

রমা দাস নামে এক স্থানীয় বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তাটি বেহাল। পুরসভাকে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। দিদকে বলো-তেও ফোন করা হয়েছিল। কোথায় সুরাহা না মেলায় আমরা নিজেরাই রাস্তাটি মেরামত করলাম।’’ চাঁপাডালি এলাকার বাসিন্দা সোমা আচার্যের কথায়, ‘‘যে ব্যক্তি রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তিনি শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। তাই কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা নিজেরাই বেড়া ভেঙে মোরাম দিয়ে রাস্তা মেরামত করেছি।’’

যে ব্যক্তি রাস্তায় বেড়া দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, সেই কার্তিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী সরমা ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘রাস্তাটি আমাদের জায়গার ওপর দিয়ে গিয়েছে। তাই আমরা বেড়া দিয়েছিলাম। এলাকায় কয়েকজন মহিলা এসে এ দিন বেড়া ভেঙে দিয়েছেন। বিষয়টি আগেই পুরসভায় জানানো ছিল। এখন পুরসভা কী ব্যবস্থা নেয় দেখব।’’

পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দ মিশ্রের এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে সামনের সপ্তাহে বসার কথা রয়েছে। এলাকার মহিলারা নিজেরাই যে রাস্তা মেরামত করেছেন, এমন খবর জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ আর যে ব্যক্তি বেড়া দিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে শাসকদলের যোগের অভিযোগ প্রসঙ্গে পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কোন দলের সেটা মুখ্য বিষয় নয়। আমি ব্যস্ত থাকার কারণে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসতে পারিনি। নিশ্চয় এই বিষয় নিয়ে আগামী দিনে আলোচনায় বসা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Women Didi Ke Bolo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE