বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনের আগে ছাত্র সংগঠনের কাজিয়া মেটাতে আসরে নামলেন তৃণমূলপন্থী শিক্ষকেরা।
২৯ জানুয়ারি মেদিনীপুরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, তার জন্য তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র সদস্যেরা টিএমসিপি-র যুযুধান দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে আর্জি জানান। ছাত্রেরা আশ্বাস দেন, ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেবেন।
শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও শিক্ষক-অধ্যাপকদের ভূমিকা নিয়ে রাজ্যে অনেক জলঘোলা হয়েছে, যে তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন যাদবপুর। তবু শাসক দল-অনুগামী শিক্ষকেরা এখনও ছাত্রভোটে নাক গলাচ্ছেন? ওয়েবকুপা-র সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসুর বক্তব্য, “বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা জানা নেই। তবে শিক্ষক হিসেবে বলতে পারি, ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা হলে তো শিক্ষকরাই বোঝাবেন। এতে আপত্তির কী আছে?”
এ বার ‘সমস্যা’ যে ঘোরালো, তাতে সন্দেহ নেই। তবে সেটা তো সাধারণ ‘ছাত্রছাত্রীদের’ নয়, বরং ছাত্র সংগঠনের দুই গোষ্ঠীর। ওয়েবকুপা নেতৃত্বের মতে, এটাকে অন্য ভাবে দেখা ঠিক নয়। ছাত্রভোট সুষ্ঠু ভাবে করতেই এই বৈঠক। টিএমসিপির মধ্যে তা হলে এমনই দ্বন্দ্ব রয়েছে যে শিক্ষকেরা নাক না গলালে তার সমাধান অসম্ভব। উত্তর এড়িয়ে ওয়েবকুপা-র বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রাজকুমার কোঠারি বলেন, “আমরা বলেছি, ভুল বোঝাবুঝি থাকলে তা মিটিয়ে নিতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।”
টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর ঝামেলায় পরিস্থিতি যে শাসকদলের নেতাদের কাছে অস্বস্তিকর, তা নতুন তথ্য নয়। এক দিকে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী স্বদেশ সরকার। অন্য দিকে, টিএমসিপি-র বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের চেয়ারম্যান তথা সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি, মুকুল রায় অনুগামী বলে পরিচিত বিশ্বনাথ দাস।
দুই ছাত্রনেতা বৈঠকে ছিলেন। ওয়েবকুপার তরফে রাজকুমারবাবু ছাড়াও ছিলেন সংগঠনের সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু। বৈঠকের পরে স্বদেশ বলেন, “এ ব্যাপারে এখন কিছু বলব না।” বিশ্বনাথের বক্তব্য, “ভোট নিয়ে কথা হয়েছে।”
টিএমসিপি-র ছাত্রদের সামলাতে কেন এত মরিয়া শিক্ষকেরা? টিএমসিপি সূত্রের খবর, সংগঠনের জেলা নেতৃত্বের চেষ্টা সত্ত্বেও দুই তরফের নেতারা শোধরাননি। বরং এক পক্ষ কোথাও স্মারকলিপি দিলে, অন্য পক্ষ পরের দিন সেখানে স্মারকলিপি দিয়ে এসেছে। এক পক্ষ কোনও দাবিতে মিছিল করলে, অপর পক্ষ পরের দিন একই দাবিতে মিছিল করেছে। মাঝে-মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছে। টিএমসিপির এক জেলা নেতার কথায়, “সংগঠনের দুই গোষ্ঠী প্রকাশ্যে একে অপরের বিরোধিতা করে চলেছে। এই ভাবে বেশি দিন চলতে পারে না। কাউকে তো রাশ টানতে হবে। জেলা নেতৃত্ব পারছে না। তাই হয়তো শিক্ষকেরা একটা চেষ্টা করলেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy