Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গয়না মেলে উৎপলার আলমারিতেই

উৎপলা নন্দীর খোয়া যাওয়া গয়না উদ্ধার হয়েছিল তাঁর নিজের আলমারি থেকেই! অরুণ নন্দী হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে এমনটাই জানালেন তদন্তকারী অফিসার তাপস ঘোষ। মাঝে বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল নবদ্বীপের সিপিএম নেতা অরুণ নন্দী হত্যা মামলার শুনানি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:২৯
Share: Save:

উৎপলা নন্দীর খোয়া যাওয়া গয়না উদ্ধার হয়েছিল তাঁর নিজের আলমারি থেকেই!

অরুণ নন্দী হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে এমনটাই জানালেন তদন্তকারী অফিসার তাপস ঘোষ। মাঝে বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল নবদ্বীপের সিপিএম নেতা অরুণ নন্দী হত্যা মামলার শুনানি। বৃহস্পতিবার ফের নবদ্বীপের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুধীর কুমারের আদালতে শুরু হল শুনানি।

২০১৩ সালের ৩১ মার্চ গভীর রাতে নিজের বাড়িতেই খুন হয়েছিলেন সিপিএমের শাখা সম্পাদক অরুণ নন্দী। ঘটনার পরের দিন অরুণবাবুর স্ত্রী উৎপলা নন্দী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, ডাকাতি করতে এসে দুষ্কৃতীরাই তাঁর স্বামীকে খুন করেছে। যাওয়ার সময় নিয়ে গিয়েছে তাঁর সোনার গয়নাও। প্রথম দিকে পুলিশ সেই মতো তদন্ত শুরু করলেও বেশ কিছু বিষয়ে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। সন্দেহ হয় পুলিশের।

ঘটনার বাইশ মাস পরে ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ গ্রেফতার করে পেশায় নার্স উৎপলা নন্দী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ নবকুমার দত্তকে। ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এই মামলার তদন্তকারী অফিসার বদলে যান। মামলার দায়িত্ব নেন সাব ইনস্পেক্টর তাপস ঘোষ। এ দিন দুপুর বারোটার পরে বিচারক সুধীর কুমারের এজলাসে সাক্ষ্য দিতে ওঠেন তিনি। সরকারি কৌঁসুলি আজাদী সংগ্রাম বসু তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।

সরকারি কৌঁসুলির প্রশ্নের উত্তরে তাপসবাবু জানান, অরুণ নন্দী খুনের দিন থেকেই নবকুমার পলাতক ছিলেন। তিনি নবকুমারের বাড়িতে একাধিক বার তল্লাশি চালিয়েও নবকুমারকে ধরতে পারেননি। এরপর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি নবকুমারকে পুলিশ গ্রেফতার করে। নবকুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উৎপলার নন্দীর নামও উঠে আসে। পরের দিন বিকেলে উৎপলাকেও পুলিশ ধরে।

তাপসবাবু এ দিন জানান, ধৃত দু’জনেই পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। জেরার মুখে তাঁরা খুনের কথা স্বীকারও করেন। অরুণবাবু খুন হওয়ার পরে উৎপলাদেবী পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে, ডাকাতি করতে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁর সোনার গয়না নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর নিজের আলমারি থেকেই পুলিশ সেই গয়না উদ্ধার করে। ১১ ফেব্রুয়ারি নবদ্বীপ সরকার পাড়ার একটি পুকুর পাড় থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ধারাল অস্ত্র। পুলিশের দাবি, জেরায় নবকুমার কবুলও করে ওই অস্ত্র দিয়েই খুন করা হয় অরুণবাবুকে।

সরকারি কৌঁসুলির প্রশ্নের উত্তরে তাপসবাবু জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তিনি গত বছর ১৩ এপ্রিল মামলার দুই অভিযুক্ত উৎপলা নন্দী এবং নবকুমার দত্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ এবং ৩৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন।

অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী তাপসবাবুকে এ দিন জেরা করেননি। তাঁকে জেরা করার জন্য তাঁরা আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন জানালে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। আগামী ২৭ জানুয়ারি, বুধবার ফের শুনানি হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE