একই দিনে জেলার দুই প্রান্তে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল দুই তরুণীর। অভিযোগ, বাপের বাড়ি থেকে অতিরিক্ত পণ না আনতে পারায় তাঁদের মরতে হয়েছে। মৃতেরা হলেন তনু নাথ (১৮) ও মিঠু বিশ্বাস (৩৪)। উভয় ক্ষেত্রে অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে শ্বশুরবাড়ির দিকে। দু’টি ঘটনায় মোট তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনা দু’টি ঘটেছে শান্তিপুরের বাঘাযতীন পাড়ায় ও রানাঘাটের কীর্তিনগরে।
পুলিশ ও মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুন মাসে শান্তিপুরের চরজিজিরা বর্মনপাড়ার বাসিন্দা অজয় বর্মনের মেয়ে তনুর সঙ্গে শান্তিপুরেরই বাঘাযতীন পাড়ার বাসিন্দা অমিত নাথের বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তনুর উপরে শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতন শুরু করে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সপ্তাহ দুয়েক আগে নতুন ব্যবসা শুরু করার জন্য অমিত এবং তাঁর পরিবার অজয়বাবুর কাছে ৫০ হাজার টাকা চায় বলে অভিযোগ। তা দিতে না পারায় তাঁর মেয়ের ওপরে অত্যাচার শুরু হয় বলে অভিযোগ। সোমবার রাতে তনুর মা রেখা বর্মনকে তনুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তনুর অসুস্থতার খবর দিয়ে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে নামিয়েই চলে যায় তারা। হাসপাতালে মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান রেখা। বুধবার তাঁরা এই ঘটনায় শান্তিপুর থানায় অমিত, তার বাবা, মা-সহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, টাকা না পেয়ে তাঁদের মেয়েকে শ্বাসরোধ করে মেরেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। অমিত ও তার মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অজয় বর্মন বলেন, ‘‘আমি সামান্য টোটো চালাই। ব্যবসা করবে বলে ছোট জামাই আমার কাছে ছোট জামাই ৫০ হাজার টাকা চায়। আমি কয়েকদিন আগে এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। এই মুহূর্তে টাকার জোগাড় করতে পারছি না বলে জানাই। পরে চেষ্টা করব বলেছিলাম। তাঁর আগেই ওরা আমার মেয়েটাকে
মেরে ফেলল।”
অন্য দিকে, বছর চারেক আগে স্বামী মারা গেলে দুই সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন মিঠু বিশ্বাস। সব জেনে সমীর বিশ্বাস নামে এক যুবক তাঁকে বিয়ে করেন। তাঁরা রানাঘাটের কীর্তিনগরে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন।
অভিযোগ, বিয়ের পর বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য মিঠুর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতে শুরু করে সমীর। মিঠুর মা বাসন্তী জানান, চাকদহের একটি মেয়ের সঙ্গে সমীরের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তা নিয়ে অশান্তি শুরু হয়। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন খবর পেয়ে আমি এবং আত্মীয়েরা রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে যাই। দেখি মেয়ের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। গলায় এবং দেহে কালশিটে দাগ। ওরা আমার মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে বা তাকে আত্মহত্যা করতে করতে বাধ্য করেছে। আমি সমীরের শাস্তি দাবি করছি।’’
শান্তিপুর সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে তনুর স্বামী অমিত নাথ এবং শাশুড়ি সোমা নাথকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রানাঘাট থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার অভিযোগ পেয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে সমীরকে। বুধবার রানাঘাট আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার
নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy