দিন পনেরো আগেই তৃণমূলের ব্লক ও শহর কমিটি তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। নবগঠিত সেই কমিটিতে হরিণঘাটা ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি হিসেবে জায়গা পেয়েছেন আদিবাসী নেতা বরুন মাহাতো। সেই বরুণকেই দিন দুয়েক আগে আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছে।
গত বুধবার আব্বাস হরিণঘাটায় আসেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেখানে বরুণও উপস্থিত ছিলেন। দু’জনের মধ্যে নানা বিষয়ে কথাও হয়। এ নিয়ে তৃণমূলের অভ্যন্তরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কয়েক দিন আগেই যাঁকে পদ দেওয়া হল তিনি দলের সভায় হাজির না থেকে উল্টে দলের বিরোধী শক্তি হিসেবে পরিচিত আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে মেলামেশা করছেন কেন।
হরিণঘাটার কাষ্ঠডাঙা-২ ব্লকের বাসিন্দা বরুন দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আদিবাসী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। তাঁর অনুগামীদের দাবি, বরুণের সঙ্গে তৃণমূলের কখনওই বিশেষ সখ্য ছিল না। ব্লক তৃণমূলের কার্যালয়ে খুব প্রয়োজন ছাড়া তিনি যেতেন না। তাঁর সম্মতি ছাড়াই ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি হিসেবে তাঁর নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বরুণেরও দাবি, তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই তাঁকে পদে বসিয়েছিল তৃণমূল। পদ পাওয়ার কথা তিনি পরিচিতদের কাছে শোনেন। এর পরে সোশ্যাল একাধিক বার প্রতিবাদও করেছেন। পদ পাওয়ার পরে ব্লক তৃণমূলের কোনও কর্মসূচিতেই যোগ দেননি।
এই অবস্থায় আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে একই মঞ্চে বরুণের উপস্থিতি তৃণমূলের বিরুদ্ধে বার্তা বলেই মনে করছেন দলের একাংশ। শুক্রবার বরুণ বলেন, “আমি তৃণমূল করি না। কেন ওরা আমাকে পদ দিয়েছিল সেটা ওরাই ভাল জানে। আদিবাসী সংগঠন করি। স্বাধীনতার পর থেকে আদিবাসী সমাজকে কোনও দলই দেখেনি। এখন আব্বাস সিদ্দিকি এই সমাজের হয়ে কথা বলছেন। ভবিষ্যতে তাঁকে বিশ্বস্ত মুখ মনে হলে হাত মেলাতেই পারি।”
দলই করেন না বলে দাবি করছেন এমন এক জন সহ-সভাপতির পদ পাওয়ায় তৃণমূলের অনেকেই ক্ষুব্ধ। যদিও প্রকাশ্যে কেউই মুখ খুলছে না। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য মানবেন্দ্রনাথ রায়ের কটাক্ষ, “তৃণমূল কোনও গ্রহণযোগ্য মুখই পাচ্ছে না। তাই সম্মতি না নিয়েই কমিটিতে নাম রাখছে।” তৃণমূলের নদিয়া জেলার অন্যতম কো-অর্ডিনেটর আবীররঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “বরুণবাবু যদি আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে বৈঠক করে থাকেন, তা হলে ভাবতে হবে তিনি মানসিক ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে ফেলেছেন। দল খোঁজখবর করে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy