Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
জোর যাত্রী নিরাপত্তায়

ঘাটে নজর জলসাথী-র

নদিয়া জেলাতে তিন পর্যায়ে ৪৯টি ফেরিঘাটের পরিকাঠামো তৈরির জন্য দশ লক্ষ টাকা করে সম্প্রতি বরাদ্দ করেছে পরিবহণ দফতর। নিরাপত্তার নজরদারির জন্য নিয়োগ হচ্ছে ‘জলসাথী’ও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর ও বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৪৩
Share: Save:

বাঁশের আধ-ফালি পাটা, পুরনো চেলা কাঠ কচ্চিৎ পুরনো জং ধরা লোহার বিম— গ্রামীণ ঘাটে এর বেশি নিরাপত্তার আশা করেন না নদী-পাড়ের গ্রামবাসীরা।

উপায় নেই, গা-সওয়া বিপদ নিয়ে তাঁদের চলাচলেও তাই ভাঁটা পড়ে না। তবে, সেই অবাধ ভেসে পড়ার মধ্যেই, নদী ফুলে ফেঁপে ঘাট ভেঙে দিলে স্থানীয় পঞ্চায়েত-প্রশাসনের টনক নড়ে, কিঞ্চিৎ মেরামত হয়। তার পর, যে কে সেই।

আর, তারই খেসারত দিয়ে কখনও শান্তিপুরের কালনাঘাট কখনও হুগলির ভদ্রেশ্বর মুর্শিদাবাদের রানিনগর, ঘাট-বিপত্তির তালিকা দীর্ঘ হতে থাকে, প্রলম্বিত হয় মৃত্যু মিছিল।

বর্ষার আগে, মেরামতির প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রতিবারই এগিয়ে আসে প্রশাসন। তবে তা কার্যকর হতে ভাদ্র গড়িয়ে যায়, এ বারও তার ব্যতিক্রম নয়। যে আশ্বাস মিলেছিল গ্রীষ্মে, যাত্রী নিরাপত্তা ‘নিশ্ছিদ্র’ করতে রাজ্য পরিবহণ দফতর সে কাজে হাত দিল পুজোর মুখে, ভাদ্র মাস অন্তে।

নদিয়া জেলাতে তিন পর্যায়ে ৪৯টি ফেরিঘাটের পরিকাঠামো তৈরির জন্য দশ লক্ষ টাকা করে সম্প্রতি বরাদ্দ করেছে পরিবহণ দফতর। নিরাপত্তার নজরদারির জন্য নিয়োগ হচ্ছে ‘জলসাথী’ও।

নদিয়ার সেই নদী-ঘাটের তালিকায় রয়েছে, ভাগীরথীর উপর নবদ্বীপের বড়ালঘাট, হুলোরঘাট, মায়াপুর ফেরি ঘাট, স্বরূপগঞ্জ ঘাট, শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ঘাট। ঘাট মেরামত করা হচ্ছে, জলঙ্গির হাতিশালা, কুপপুরিয়া, তেঘরির, করিমপুরে ফাজিলনগর-আমতলা ফেরিঘাটও। পরিবহন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় ছ’টি ঘাটের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। শুরু হয়ে গিয়েছে কাজ।

পুজোর ভিড় সামাল দিতে মুর্শিদাবাদ জেলার ৫১’টি ফেরিঘাটেও শুরু হয়েছে মেরামতির কাজ। বরাদ্দ টাকার পরিমাণ একই। ইতিমধ্যেই ৩১টি ফেরিঘাটে কাজও শুরু হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই টাকায় তৈরি হবে যাত্রী প্রতিক্ষালয়, শৌচাগার, পানীয় জলের ব্যবস্থা, লাগানো হবে সিসি টিভি, লাইফ জ্যাকেট, তৈরি করা হবে পথ নির্দেশিকা, টিকিট কাউন্টার আর কেনা হবে পর্যাপ্ত সংখ্যক অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার।

কিন্তু পরিকাঠামো তৈরি করে দিলেই তো আর হবে না। সে গুলো ঠিকমত ব্যবহার হবে তো? কর্তাদের অভিজ্ঞতা কিন্তু সে কথা বলছে না।

প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “সব রকম পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়ার পরে লাইফ জ্যাকেট কিনে দেওয়ার পরেও দেখেছি মানুষ সে গুলো ব্যবহার করছে না।”

সে সমস্যা মেটাতে প্রতিটি ঘাটে নজরদারির জন্য নিয়োগ করা হবে ‘জলসাথী’। যাঁরা নৌকা পারাপারের পাশাপাশি ঘাটের অন্য নিয়মকানুন মানা হচ্ছে কিনা সে দিকে নজর রাখবেন।

নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “প্রাথমিক ভাবে এই ঘাট গুলোর পরিকাঠামো তৈরি করতে পারলেই বিপদ অনেকটাই কমে যাবে। সঙ্গে জলসাথীদের সতর্কতা, আসা করা যাচ্ছে, ঘাট এখন অনেকটাই নিরাপত্তার বলয়ে থাকবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ferry Repair Administration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE