৩৪নম্বর জাতীয় সড়ক।
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর শেষ পর্যন্ত আবার নতুন করে শুরু হল কৃষ্ণনগর থেকে জাগুলি পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। নভেম্বরে কাজ শুরু হবে। ৩০ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার চুক্তি হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
তবে গোটা এলাকায় জমি বিতর্ক এখনও মেটেনি। অনেক জমিমালিক এখনও চেক নেননি। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ কতটা শেষ করা সম্ভব, তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে নতুন করে কাজ শুরু হওয়ায় খুশি সকলেই।
উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থেকে নদিয়ার কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ‘প্যাকেজ ১’ এবং কৃষ্ণনগর থেকে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর পর্যন্ত ‘প্যাকেজ ২’-এর কাজ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে। ‘প্যাকেজ ২’-এর কাজ খুঁড়িয়ে চললেও ‘প্যাকেজ ১’-এর কাজ প্রথমেই মুখ থুবড়ে পড়ে। এই অংশের দায়িত্বে থাকা ‘মধুকন’ সংস্থা দাবি করেছিল, ঠিক সময়ে জমি না পাওয়ায় তাদের কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। তাতে প্রকল্পের খরচও বেড়ে গিয়েছে। দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে ২০১৫ সালে তারা রাস্তা তৈরির কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।
এর পর প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি থমকে যায়। কোন সংস্থাকে দিয়ে ফের কাজ করানো হবে, তা ঠিক করা যাচ্ছিল না। শেষে ঠিক হয়, রাজ্য পূর্ত দফতর এই অংশের কাজ করবে। সেই মত ২০১৭-র ফেব্রুয়ারিতে পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক ডিভিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা নতুন করে বিস্তারিত পরিকল্পনা (ডিটেলড প্রজেক্ট রিপোর্ট বা ‘ডিপিআর’) তৈরি করে। তা অনুমোদন পাওয়ার পরে দরপত্র চাওয়া হয়। শেষে ‘কেসিসি বিল্ড কন’ নামে একটি সংস্থাকে রাস্তা তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নদিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘প্যাকেজ ১’-এর মধ্যে পড়ছে বারাসত থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত রাস্তা। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যে যে অংশ আছে সেখানে জমি নিয়ে জটিলতা রয়েছে। সেই কারণে জাগুলি থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত নদিয়ার অংশে কাজ শুরু হল। জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, “আমাদের জেলায় জমি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। যারা এখনও চেক নেননি, তাঁরা নিয়ে নেবেন। এ বার দ্রুত কাজ হবে। সকলেই চাইছেন, রাস্তাটার কাজ দ্রুত শেষ হোক।”
‘প্যাকেজ ২’-এর কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। নদিয়ার মধ্যে আর মাত্র চার কিলোমিটার রাস্তার কাজ বাকি রয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের দাবি। নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু বলেন, “সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়েই উন্নয়নমূলক কাজ করতে হয়। এই রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রেও আমরা তা করব। মানুষ চাইছে কাজ হোক।”
তবে এখনও পর্যন্ত কোনও-কোনও জায়গায় জমি পরিষ্কার হয়নি বা দখলমুক্ত হয়নি। সে ক্ষেত্রে রাস্তার কাজ বাধা পাবে না? নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে কী করে? দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার সিনিয়র ম্যানেজার (হাইওয়ে) বিজয় ঠাকুরের বক্তব্য, “আমরা ছোট-ছোট জায়গা ধরে কাজ করব। যেখানে জমি পাব, সেখানকার কাজটা করে নেব। ফলে সমস্যা হওয়ার কথা না।”
উত্তর ২৪ পরগনার অংশে জট কবে খুলবে, তা অবশ্য অজানাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy