Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ছুঁতমার্গ টিকছে কি?

বিজেপিকে নিয়ে ধরি মাছ না ছুঁই

সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের ভোট পূর্ববর্তী বোঝাপড়া আছে। জোট করতে সমস্যা নেই। কিন্তু কাবিলুরে না হলেও বন্যেশ্বরে তৃণমূলকে রুখতে গেলে বিজেপির হাত ধরতেই হবে তাদের। সেটা কি সম্ভব?

কল্লোল প্রামাণিক, বিমান হাজরা
করিমপুর ও সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০২:৫৭
Share: Save:

ভোট শেষ হলেও জোট শেষ হয়নি। কোথাও-কোথাও বরং তা আরও ডালপালা মেলতে পারে।

করিমপুর ১ ব্লকের হরেকৃষ্ণপুর ও হোগলবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে আবার বিজেপি ও তৃণমূল দুই পক্ষকে নির্ভর করতে হবে নির্দল সদস্যদের উপরে। হরেকৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতে ১৭ টি আসন। তৃণমূল আটটি, বিজেপি সাতটি এবং নির্দল প্রার্থীরা দু’টি আসনে জয়ী হয়েছেন। বোর্ড গড়তে লাগবে অন্তত ন’টি আসন। হোগলবেড়িয়াতেও মোট আসন ১৭টি। তৃণমূল ছ’টি, বিজেপি আটটি, সিপিএম একটি, নির্দলেরা দু’টি আসনে জিতেছে। ফলে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও অন্তত আর একটি আসন তাদের লাগবে। জয়ী দুই নির্দল প্রার্থী যদি তৃণমূলের দিকে ঢলেও পড়েন, তা হলেও তাদের ন’টি আসন হচ্ছে না। ফলে অবস্থা প্যাঁচালো।

বিজেপির নদিয়া জেলা উত্তর সভাপতি মহাদেব সরকারের দাবি, ‘‘তৃণমূলের বিরোধিতা করার জন্যই ওই নির্দল প্রার্থীরা ভোটে লড়েছেন। তাঁরা তৃণমূলকে নয়, আমাদেরই সমর্থন করবেন।’’ করিমপুর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ সাহা বলেন, ‘‘বোর্ড গঠন হতে অনেক দেরি। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হবে।’’

সাগরদিঘির দুই গ্রাম পঞ্চায়েতে যেমন আপাতত এক ঘাটে জল খাচ্ছে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ও নির্দল। লক্ষ্য একটাই, শাসক দলের থাবা থেকে বোড়ে বাঁচানো। বন্যেশ্বর ও কাবিলপুর পঞ্চায়েতে একক গরিষ্ঠতা নেই কোনও দলেরই। কাবিলপুরে ১৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের আট জন, কংগ্রেসের পাঁচ এবং সিপিএমের চার সদস্য রয়েছেন। নির্দল হিসেবে যে এক জন জিতেছেন, তিনি আসলে এসডিপিআই দলের। ফলে তাঁকে সঙ্গে পাওয়াও তৃণমূলের পক্ষে শক্ত।

বন্যেশ্বরে ১৯টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ছ’টি। কংগ্রেস ও বিজেপি পেয়েছে চারটি করে, তিনটি পেয়েছে সিপিএম। বাকি দুই নির্দল সদস্য যদি তৃণমূলে ভিড়েও যান, তা হলেও তারা ম্যাজিক-সংখ্যা ১০-এ পৌঁছতে পারছে না।

সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের ভোট পূর্ববর্তী বোঝাপড়া আছে। জোট করতে সমস্যা নেই। কিন্তু কাবিলুরে না হলেও বন্যেশ্বরে তৃণমূলকে রুখতে গেলে বিজেপির হাত ধরতেই হবে তাদের। সেটা কি সম্ভব?

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য জ্যোতিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “এ ছাড়া তো তৃণমূলকে ঠেকানোর উপায় নেই। এ রাজ্যে আমাদের মতো বিজেপিও আক্রান্ত। এখানে তাই ছুঁতমার্গ রাখছি না।’’ তার পরেই তিনি সতর্ক করেন, ‘‘তা বলে দলগত ভাবে বিজেপির প্রতি আমাদের মনোভাবের কোনও পরিবর্তন হয়নি।” কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি অলক চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “শত্রুর শত্রুই এখন আমাদের মিত্র।” বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি সুজিত দাসের বক্তব্য, “তৃণমূলকে ঠেকাতে না পারলে গণতন্ত্র টিকবে না। যেখানে যে ভাবে সম্ভব আমরা বিরোধী জোটে আছি।”

ব্লক তৃণমূল সভাপতি নুরজামাল শেখ অবশ্য বলছেন, “বোর্ড গঠনের এখনও ঢের দেরি। দু’টি পঞ্চায়েতের বিরোধী সদস্যরা অনেকে যোগাযোগ করছেন। ছবিটা পরিষ্কার হতে একটু সময় লাগবে।” ঘোড়া কেনাবেচা যে কার্যত হতে চলেছে, সেই ঈঙ্গিত তাঁর কথায় প্রায় স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Election 2018 Alliance BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE