Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চলল না বাস, বেলায় খুলল দোকান

এ দিনটায় এমনিতেই দোকানপাট বন্ধ থাকে নবদ্বীপে। মঙ্গলবার সকাল থেকে তাই খুব কিছু বোঝার উপায় ছিল না। 

স্বাগতম: মুখ্যমন্ত্রীর আসছেন বলে গড়া হয়েছে তোরণ। সেখান দিয়েই এগিয়ে এল বামেদের মিছিল। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

স্বাগতম: মুখ্যমন্ত্রীর আসছেন বলে গড়া হয়েছে তোরণ। সেখান দিয়েই এগিয়ে এল বামেদের মিছিল। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৩
Share: Save:

এ দিনটায় এমনিতেই দোকানপাট বন্ধ থাকে নবদ্বীপে। মঙ্গলবার সকাল থেকে তাই খুব কিছু বোঝার উপায় ছিল না।

কিন্তু জেলার বাকি প্রায় সর্বত্রই অনুভূত হয়েছে ধর্মঘটের প্রভাব। সারা দিন না হলেও অন্তত সকালে। তার একটা কারণ যদি হয় কৃষ্ণনগর-সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের যে কারও ডাকা বন্‌ধে ঘরে ঢুকে পড়ার অভ্যেস, আর একটা কারণ অবশ্যই বামেদের মরিয়া মনোভাব।

বাস-ট্রেন-গাড়ি

কয়েক জায়গায় অবরোধের জেরে কিছুক্ষণের জন্য রেল চলাচল ব্যাহত হলেও বেশির ভাগটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সকাল থেকে রাস্তায় কোনও বেসরকারি বাস নামতে দেখা যায়নি। দুর্ভোগ আঁচ করে বহু মানুষ রাস্তাতেই বেরোননি। যাঁদের বেরোতে হয়েছিল, তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন।

সকাল থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কে যানবাহন কম চলেছে। শান্তিপুর, তাহেরপুর, ফুলিয়া এলাকায় যান চলাচলের ওপরে মিশ্র প্রভাব পড়ল। সকালে ফুলিয়ায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। বাস চলাচল করেনি। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু অটো, ট্রেকার চলেছে। করিমপুরে বেসরকারি বাস খুব কম চললেও সরকারি বাস ও ছোট গাড়ি রাস্তায় ছিল। রাস্তা আটকানোর জন্য চার জন ধর্মঘটীকে পুলিশ আটক করলেও পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

কৃষ্ণনগরে সকাল থেকে সরকারি বাস চলেছে। বেসরকারি বাস না চললেও দুপুরের দিকে তৃণমূলের চপাচাপিতে দু’একটি বাস রাস্তায় নামে। তবে যাত্রী ছিল একেবারেই হাতে গোনা।

স্কুল-কলেজ

বেশির ভাগই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ছিল খোলা। সিপিএমের লোকজন দু’একটি বন্ধ করলেও সে ভাবে সাড়া পড়েনি। তবে স্কুল কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকারা থাকলেও পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল কম। রানাঘাটের এক অভিভাবক জানান, গন্ডগোলের ভয়ে ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাননি।

অফিস-কাছারি

জেলা প্রশাসনিক ভবন ও জেলার অন্য সরকারি হাসপাতালে কর্মীদের উপস্থিতির হার অন্য দিনের তুলনায় বেশি ছিল বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে সেখানে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। খোলা ছিল কৃষ্ণনগর আদালত। তবে বেসরকারি অফিসে কর্মীর সংখ্যা ছিল কম।

শান্তিপুর-সহ প্রায় সর্বত্রই ব্লক প্রশাসনিক দফতর ও পুরসভায় কাজ হয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই। অধিকাংশ জায়গায় কর্মীদের উপস্থিতির হার ছিল ১০০ শতাংশ। কৃষি, খাদ্য এবং অন্য দফতরগুলিতেও হাজির ছিলেন কর্মীরা। তৃণমূলের দাবি, সিপিএম পরিচালিত তাহেরপুর পুরসভায় প্রথমে গেট বন্ধ ছিল। পরে ধর্মঘট বিরোধী কর্মীরা উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় সই করেন। তবে পুরপ্রধানের দাবি, ধর্মঘট সমর্থন করে অনেক কর্মীই হাজির হননি।

বাজারহাট

মাছ ও আনাজ বাজার ধর্মঘটের কার্যত কোনও প্রভাবই পড়েনি। কৃষ্ণনগর শহরে বন্‌ধে বরাবরই প্রতিটি বাজার খোলা থাকে। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে খরিদ্দারের তেমন ভিড় ছিল না। রানাঘাট এবং চাকদহেও সব বাজার খোলা ছিল। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতার সংখ্যা কম ছিল। তেহট্ট বা কালীগঞ্জ কালীগঞ্জ বাজার প্রায় স্বাভাবিক ছিল। তবে পলাশির বাজার এলাকায় ধর্মঘটের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো।

দোকানপাট

কৃষ্ণনগর শহরের বেশির ভাগ দোকানপাট ছিল খোলা। প্রথম দিকে বেশ কিছু বন্ধ থাকলেও বেলার দিকে অনেক দোকানই খুলতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরতে শুরু করে। রানাঘাটে আবার সকালের দিকে অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। বেলা বাড়ার পরে বেশ কিছু দোকান খোলে। করিমপুর, তেহট্ট, বেতাইয়ে বেশির ভাগ দোকানপাট খোলা ছিল। সকালেই শান্তিপুরের, তাহেরপুর, বাদকুল্লার বিভিন্ন বাজারে মিছিল করে দোকান বন্ধ রাখার আবেদন জানানো হয়। ফুলিয়ায় অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। কিছু জায়গায় তৃণমূলের তরফে দোকান খোলা রাখার পাল্টা প্রচারও করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bandh Bharat Bandh CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE