Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও অশান্তি

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রানাঘাটে মিছিল করেন বন্‌ধ সমর্থনকারীরা। বিরোধিতা করে পাল্টা মিছিল করে তৃণমূলও। পলাশি, বাদকুল্লাতেও সন্ধ্যায় মিছিল করেন ধর্মঘটকারীরা। এ দিন সকালে শিমুরালি স্টেশনে ঝামেলা হয়। ধর্মঘটকারীদের অভিযোগ, প্ল্যাটফর্মে মিছিল করার সময় তৃণমূলের তরফে সেখানে হামলা করা হয়।

মিছিল। কৃষ্ণনগরে।—নিজস্ব চিত্র।

মিছিল। কৃষ্ণনগরে।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০৫
Share: Save:

বন্‌ধের দ্বিতীয় দিনেও অশান্তি পুরোপুরি এড়ানো গেল না। বুধবার শিমুরালি স্টেশনে বন্‌ধকে কেন্দ্র করে ঝামেলা বাধে। কালীগঞ্জে এক সিপিএম নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করতে গেলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। তবে বিক্ষিপ্ত ঘটনা বাদ দিলে এ দিন পরিস্থিতি ছিল অনেকটাই স্বাভাবিক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রানাঘাটে মিছিল করেন বন্‌ধ সমর্থনকারীরা। বিরোধিতা করে পাল্টা মিছিল করে তৃণমূলও। পলাশি, বাদকুল্লাতেও সন্ধ্যায় মিছিল করেন ধর্মঘটকারীরা। এ দিন সকালে শিমুরালি স্টেশনে ঝামেলা হয়। ধর্মঘটকারীদের অভিযোগ, প্ল্যাটফর্মে মিছিল করার সময় তৃণমূলের তরফে সেখানে হামলা করা হয়। সেখানে সিটু’র জেলা সভাপতি অমল ভৌমিক-সহ চার সিপিএম কর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও তৃণমূলের দাবি, সেখানে তারা হামলা করেনি। ট্রেন বন্ধ রাখার কারণে মাছ এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছিল। তাঁদের সঙ্গেই ধর্মঘটকারীদের ঝামেলা হয়। পাশাপাশি, তাহেরপুরে ধর্মঘটের সমর্থনে যাঁরা রাস্তায় নামেন, তাঁদের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ সিপিএমের। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

এরই মধ্যে, এ দিন সিপিএমের যুবনেতা অজয় সরকারকে পুলিশ গ্রেফতার করতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে বন্‌ধের সমর্থনে জাতীয় সড়কে মিছিল বার করে সিপিএম। জাতীয় সড়কের উপর এক লরি আটকে স্লোগান দিচ্ছিলেন মিছিলের লোকজন। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। এর পরে সিপিএমের যুব নেতা অজয় সরকারের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে। পরে অবশ্য তা মিটেও যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, অজয়ের বিরুদ্ধে পুরনো মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে জানার পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করতে যায়। ওই যুব নেতা এরপর পলাশির সিপিএম পার্টি অফিসে আশ্রয় নেন। পুলিশকে বাধা দেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। গোলমালের ফাঁকে অজয় সেখান থেকে পালিয়ে যান। তাঁর খোঁজ চলছে।

অশান্তির ঘটনা কমলেও ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও প্রভাব পড়ে বেসরকারি বাস চলাচলে। জেলার সর্বত্রই বেসরকারি বাস সে ভাবে চলেনি। তবে সরকারি বাস রাস্তায় নেমেছে। শান্তিপুর, তেহট্ট, করিমপুরের মতো জায়গায় অটো, টোটো, ট্রেকার চলেছে। কল্যাণী এলাকায় সকালের দিকে যাত্রিবাহী যান চলাচল কিছু কম ছিল। তবে বেলার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। জেলায় ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। বুধবার সকাল ৭টা নাগাদ রানাঘাট শিয়ালদহ শাখার শিমুরালি স্টেশনে অবরোধ করেন বন্‌ধ সমর্থনকারীরা। পরে সেখানে যায় রেলপুলিশ এবং আরপিএফ। তারা অবরোধ তুলে দেয়। মঙ্গলবারের থেকে বুধবার ট্রেনে যাত্রীর সংখ্যা ছিল বেশি।

রানাঘাট, চাকদহ, শান্তিপুর, তেহট্ট— জেলার সর্বত্রই অধিকাংশ দোকানপাট ছিল খোলা। বিভিন্ন জায়গায় বাজার বসেছে স্বাভাবিক ভাবেই। ক্রেতাদের ভিড়ও ছিল। জেলা সদর কৃষ্ণনগরেও এ দিনের বন্‌ধের সে ভাবে প্রভাব পড়েনি। দোকানপাট ছিল খোলাই। সরকারি দফতরও সব জায়গাতেই ছিল খোলা। সেখানে কাজও হয়েছে স্বাভাবিক ভাবে। জেলা প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে তেহট্ট, কালীগঞ্জ, কল্যাণী— সর্বত্রই সরকারি দফতরে কর্মীদের হাজিরা ছিল স্বাভাবিক। কল্যাণী শিল্পাঞ্চলও এ দিনের বন্‌ধে ছিল স্বাভাবিক। কল্যাণী এলাকায় পুলিশ ছিল সক্রিয়।

নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Strike Bharat Bandh 2019 Unrest Situation CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE