বিয়াস সরকার
দাদুর কথা খুব মনে পড়ছে মেয়েটার। হাসপাতালের খাট থেকে পড়ে যাওয়ায় বেসরকারি হাসপাতাল তাঁকে ঠেলে দিয়েছিল ভেন্টিলেশনে। উনিশ দিন পরে সেখানেই মারা গিয়েছিলেন বৃদ্ধ। শোকস্তব্ধ দিনে, ঘরের কোণায় দাঁড়িয়ে সে দিনই মেয়েটা ঠিক করে নিয়েছিল, ‘ডাক্তার হব।’ দাদুর মতো কেউ যেন এমন অবহেলায় মারা না যায়। সেই বিয়াসের এ বার খুব আফসোস, ‘‘ফোর্থ (চতুর্থ) হয়ে গেলাম!’’
সাকুল্যে তিন নম্বরের তফাত, তাতেই ছিটকে গিয়েছে মেয়েটা। তবে, মুর্শিদাবাদ জেলায় সেই সেরা। বহরমপুর কাশীশ্বরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বিয়াস সরকারের খুশি হয়েও তাই ‘ইস’টা যাচ্ছে না!
৬৮৭’র মধ্যে সাতটি লেটার। তার মধ্যে, অঙ্ক-ভৌতবিজ্ঞান আর ভুগোলে একেবারে ফুল মার্কস, একশোয় একশো।
বিয়াসের বাবা হরিহরপাড়া রুকুনপুর হাইস্কুলের শিক্ষক, বিজন সরকার। বলছেন, ‘‘ছোট মেয়েটাকে নিয়ে জীবনবিজ্ঞানটা নিয়ম করে পড়িয়েছি। তবে, কৃতিত্বটা ওর মায়ের প্রাপ্য।’’ মেয়েও সে কথা মেনে নিচ্ছে, ‘‘বাবা পড়িয়েছে ঠিকই, তবে, মা না থাকলে এই রেজাল্টটা হত না।’’ ছ-ছ’জন গৃহ শিক্ষক, বাবার অনুশাসন, তার পরেও মা নিভা সরকার যেন মেয়েকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছিলেন। তবে, এখনও ছোট্টটি রয়ে গিয়েছে বাড়ির আদরের তাতান। ডোরেমন না দেখলে এখনও ভাত হজম হয় না। এ ক’টা দিনে অবশ্য ভাটা পড়েছে, ডোরেমনের জন্য বড্ড মন পুড়েছে তার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy