প্রতীকী ছবি।
দিন কয়েক আগেই নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি বদল করেছিল বিজেপি। এ বার দলের জেলা কমিটিতেও রদবদল করা হল। বাদ পড়লেন বেশ কয়েক জন পদাধিকারী, গুরুত্ব কমল কয়েক জনের। বাদ পড়লেন জগন্নাথ সরকার ঘনিষ্ঠ শিবিরের কয়েক জন। তেমনি বাদ পড়লেন দলের মধ্যে জগন্নাথের বিরোধী বলে পরিচিত দিব্যেন্দু ভৌমিকও। তবে নতুন জেলা কমিটিতে চমক মুকুটমণি অধিকারী। জেলা পদাধিকারীদের মধ্যে একাধিক নতুন মুখও আছে।
জগন্নাথ রানাঘাটের সাংসদ হওয়ার পরেই দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি বদল করেছিল বিজেপি। নতুন সভাপতি করা হয় মানবেন্দ্রনাথ রায়কে। তাদের ২১ জনের জেলা কমিটিতে আট জন সহ-সভাপতি, আট জন সম্পাদক এবং তিন জন সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন। কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন রানাঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েও সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি না পাওয়ায় দাঁড়াতে না পারা তরুণ চিকিৎসক মুকুটমণি অধিকারী। অতি সম্প্রতি মতুয়া সংগঠনের গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এ বার দলের জেলা কমিটির অন্যতম সম্পাদকও হলেন তিনি।
সাংগঠনিক বিচারে গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সম্পাদক পদেও বদল আনা হয়েছে। তিন জন সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে জগন্নাথের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মনোজ বিন বাদ পড়েছেন। তাঁকে আর কোনও পদেই রাখা হয়নি। সাধারণ সম্পাদক থেকে সহ-সভাপতি হয়েছেন অশোক চক্রবর্তী। অর্থাৎ সাংগঠনিক গুরুত্বের বিচারে তাঁর পদাবনতি হয়েছে। বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়েছেন দিপালী ভারতী, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আগের কমিটিতে সম্পাদক পদে থাকা বিপুল উকিলও বাদ পড়েছেন। মনোজের মতো তিনিও জগন্নাথ সরকারের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
আবার সাধারণ সম্পাদক পদে দু’টি বদল হলেও রয়ে গিয়েছেন জগন্নাথের আর এক ঘনিষ্ঠ তারক সরকার। বাকি দুই সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছেন পঙ্কজ বসু ও সুশান্ত সিকদার। পঙ্কজ দলের সম্পাদকমণ্ডলীতে ছিলেন। সম্পাদক থেকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে সুফল সরকারকে। জগন্নাথের প্রবল বিরোধী এবং মানবেন্দ্রনাথ রায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দিব্যেন্দু ভৌমিক হারিয়েছেন সহ-সভাপতির পদ। তাঁকে আর কোনও পদে রাখা হয়নি। তবে দিব্যেন্দুর ঘনিষ্ঠ অশোক বিশ্বাস জেলা কমিটিতে এসেছেন সম্পাদক পদে। জগন্নাথের ঘনিষ্ঠ রাখালরঞ্জন সাহাকেও দলের অফিস সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। তবে জগন্নাথ শিবিরের অনেকে কমিটিতে রয়েও গিয়েছেন। কেউ আগের পদেই রয়েছেন, আবার কারও ডানা ছাঁটা হয়েছে। সহ-সভাপতি পদে রয়ে গিয়েছেন পূর্ণিমা দত্ত, স্বপন দাম, নিরঞ্জন বিশ্বাসেরা।
তবে নতুন কমিটিতে কিছু মুখের অন্তর্ভুক্তি এবং বাদ পড়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে দলের অন্দরেই। বিজেপি কর্মীদের একাংশের আক্ষেপ, দলের অনেক সক্রিয় নেতাকে কমিটিতে জায়গা দেওয়া হল না। দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি জগন্নাথ বলেন, “অনেক সক্রিয় নেতা বাদ পড়েছেন, যাঁরা লোকসভায় ভাল ফল করিয়ে এনেছেন।’’
তবে গত লোকসভা ভোটে মানবেন্দ্রনাথ রায়েক ভূমিকা নিয়েও টিপ্পনী কাটছেন কেউ-কেউ। কেননা লোকসভা ভোটে দাঁড়ানোর জন্য তিনি মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। তবে দল তাঁকে প্রতীক দেয়নি। দলের অনুমতি ছাড়াই তিনি সে কাজ করেন বলেও অনেকের দাবি। তবে মানবেন্দ্রনাথ দাবি করেন, “দলের অনুমতি নিয়েই মনোনয়ন জমা দিই।” নতুন জেলা কমিটি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “সবাইকে জায়গা দেওয়া সম্ভব হয়নি। সকলেই যোগ্য, আমি তার মধ্যে কে বেশি কার্যকরী, সেই খোঁজ করেছি। তারুণ্য আর অভিজ্ঞতা মিশিয়ে কমিটি তৈরি করতে চেয়েছি।”
জগন্নাথ বলেন, ‘‘নতুন সভাপতি নিশ্চয়ই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কিছু পরিকল্পনা করেছেন।’’ আশা করব, যাঁরা বাদ পড়লেন, আগামী দিনে তাঁদেরও দল ব্যবহার করবে।” দিব্যেন্দুর মতে, “ভাল কমিটি হয়েছে। তরুণ মুখ আনা হয়েছে। এতে দল এগিয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy