মগ্ন: বইমেলায়। নিজস্ব চিত্র
সারাদিনে মেরেকেটে কত জনের পা পড়ে তার হিসেব রাখে না কেউ। কিন্তু, আলো-আঁধারির চেনা পাঠাগারটি যেন কোনও যাদুবলে আচমকা জীবন্ত হয়ে উঠেছে। বাইরে তখন নববর্ষার অবিরাম ধারাপাত। রঘুনাথগঞ্জের দেশবন্ধু যতীনদাস মহকুমা গ্রন্থাগারের ভিতরে অজস্র মানুষের ভিড়। হবে নাই বা কেন। বইমেলা চলছে যে।
বইমেলা! এই ভরা বর্ষায়? হ্যা, রঘুনাথগঞ্জ গ্রন্থাগার কর্মী সমিতি এমন অকাল বইমেলার আয়োজন করেছিল। মাত্র দু’দিনের। কিন্তু তাতে যা সাড়া মিলেছে, তাতে প্রতি বছর এমন বইমেলা আয়োজনের ভাবনা শুরু হয়েছে আয়োজকদের মধ্যে। কারণ, দু’ দিনে চার লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে পাঠাগারের বই মেলায়।
কিন্তু কেন এমন মেলার আয়োজন? গ্রন্থাগার কর্মী সমিতির মহকুমা সম্পাদক শিবেন্দু গোষ্মামী জানান, মূলত মহকুমার গ্রন্থাগারগুলির জন্যই এমন বইমেলার আয়োজন। রাজ্য সরকার এ বার গ্রামীণ গ্রন্থাগারগুলিকে ১৭ হাজার এবং শহরের গ্রন্থাগারগুলিকে বই কেনার জন্য ৩৫ হাজার টাকা করে দিয়েছে। মেলা থেকেই যে বই কিনতে হবে তেমন নয়।
শিবেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমরা তখন চিন্তা করি, যদি আমাদের এখানেই একটা মেলার আয়োজন করা যায়। আমরা কলকাতার প্রকাশকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁরা আসতে রাজিও হয়ে যান।’’
এই বইমেলার প্রস্তুতিটাও বেশ চমকপ্রদ। গত এক মাস ধরে গ্রন্থাগারের পাঠকেরা তাঁদের পছন্দের বইয়ের নাম লিখেছেন পাঠাগারগুলির খাতায়। পাঠকদের পছন্দের বইয়ের নাম প্রকাশনা সংস্থাগুলিকে জানানো হয়। গ্রন্থাগারগুলির বইয়ের নামও তাদের জানানো হয়। গ্রন্থাগারে যে মেলা বসছে সে কথা রঘুনাথগঞ্জ শহর এবং অন্যান্য এলাকায় প্রচার করা হয়েছিল।
মহকুমা গ্রন্থাগারের হলঘরেই বুধবার শুরু হয় বইমেলা। দু’দিনের বইমেলায় সবমিলিয়ে খরচ হাজার দশেক টাকা। তুলনায় বিক্রি লাখ চারেকের। মন্দা বাজারে তা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। বলছেন রাজ্যের পাবলিসার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স অ্যাশোশিয়েশনের সহকারি সভাপতি তপন বিশ্বাস। এই মেলায় বাড়তি লাভ অন্যত্র বই কিনলে সরকারের নির্দেশ মত ১৫ শতাংশ হারে কমিশন মেলে। এই মেলায় মিলছে ৩০ শতাংশ।
এতকিছুর মধ্যে অপ্রাপ্তিও আছে বইকি। মহকুমায় ৩৬টি গ্রন্থাগারের মধ্যে ১৬টিতে কোনও গ্রন্থাগারিক নেই। তাই টাকা থাকলেও নিয়মের গেরোয় বই কিনতে পারল না তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy