থানায় কংগ্রেসের বিক্ষোভ। ছবি: কৌশিক সাহা।
ভোট-পরবর্তী অশান্তিতে জেরবার কান্দি পুরসভা এলাকা। রবিবার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ওই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। এমনকী কান্দি থানায় আইসির ঘরে হাতাহতিতে জড়ায় দুই পক্ষ। তবে, কোনও পক্ষেরই কাউকে পুলিশ এখনও গ্রেফতার করেনি।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ। ওই পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে শিবরামবাটী এলাকায় তৃণমূল প্রার্থী সুশান্ত চন্দ্রের মদতে তৃণমূলের কর্মী সুরজ শেখ ও সুশান্ত দাস কংগ্রেস সমর্থকদের বাড়িতে চড়াও হয়। চলে অকথ্য গালিগালাজও। তেমনিই অভিযোগ কংগ্রেসের। সেই সময় কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা রুখে দাঁড়ালে দু’পক্ষের মারপিট শুরু হয়। পরে ওই ওয়ার্ডের কংগ্রেসের প্রার্থী সুব্রত চক্রবর্তী ওই মহিলাদের নিয়ে কান্দি থানায় অভিযোগ জানাতে যান। সেখানে আইসির ঘরে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি উজ্বল মণ্ডলের সঙ্গে অভিযুক্ত সুরজ শেখ ও সুশান্ত দাস বসে থাকতে দেখে তাদের গ্রেফতারের দাবি জানান ওই মহিলারা। শুরু হয় দু’পক্ষের বচসা। আইসির ঘরের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষই। এরপর কংগ্রেস কর্মীরা থানায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। রাত দু’টো থেকে ভোর সাড়ে চারটে পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। এর মধ্যে তৃণমূল প্রার্থী সুশান্তবাবু সুরজ শেখকে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করলে কংগ্রেস প্রার্থী সুব্রতবাবু ও কংগ্রেস সমর্থকরা সুশান্তবাবুকে মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ দু’পক্ষকে শান্ত করার েচষ্টা করে।
সুশান্তবাবুর দাবি, ‘‘এ দিন রাত ১০টা উজ্জ্বলবাবু আমাকে থানায় আসতে বললে আমি যাই। সেখান থেকে ফেরার সময় কংগ্রেস কর্মীরা আমাকে মারধর করেন। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।’’ অন্য দিকে, মারধরের অভিযোগ স্বীকার করে সুব্রতবাবু জানান, এ দিন তাঁর দাদা দেবব্রতবাবুও থানায় অভিযোগ জানাতে যান। থানায় বাইরে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে তৃণমূলের লোকজন মারধর করেন। তিনি বলেন, ‘‘মারধরের খবর পেয়ে আমি দাদাকে বাঁচাতে যাই। তখন আমাকেও মারধর করা হয়। নিজেকে বাঁচাতে আমিও পাল্টা মার দিই।’’
কান্দি পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান কংগ্রেসের গৌতম রায় বলেন, ‘‘তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ার অপরাধে আমাদের মহিলা কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে কটূক্তি করেছে তৃণমূলের লোকজন।’’ তবে থানার ভিতর মারামারির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস মারধরের ঘোর বিরোধী। যাঁরা ওই কাজ করেছে দল তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে। তবে গোটা ঘটনার জন্য কান্দি থানার পুলিশও সমান দায়ী।” যদিও মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি উজ্জ্বল মণ্ডল ওই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেন।
এ দিকে, সোমবার সকালে ওই পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে জনা কয়েক তৃণমূল সমর্থক কংগ্রেস কর্মীদের লক্ষ্য করে গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বচসা হাতাহাতিতে গড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মানিক মুখোপাধ্যায় ও তার স্ত্রী মুনমুনদেবীকে থানায় নিয়ে যায়। প্রতিবাদে ওই ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পরে মানিকবাবুকে আটক করা হলেও মুনমুনদেবীকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। ওই পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলার গুরুপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলের পরামর্শে পুলিশ কাজ করছে। ফের সেটা প্রমাণিত হল।’’ যদিও সেই দাবি নস্যাৎ করে দেন উজ্জ্বলবাবু।
কান্দির এসডিপিও সন্দীপ সেন বলেন, “ভোট পরবর্তী পর্বে কয়েকটি এলাকায় অশান্তি শুরু হয়েছ। তবে পুলিশ টহল আরও মজবুত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy