Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Hospital

ছুটি নিয়েও কোপে? প্রশ্ন হাসপাতালে

কোভিড ডিউটিতে যুক্ত চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সিসিইউ-এ ২৪ ঘণ্টাই ভেন্টিলেটর চালানোর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সিসিইউ মেডিক্যাল অফিসার, নার্স ও টেকনিশিয়ান রাখা নিয়ম। কারণ সেখানে প্রতি মুহূর্তে রোগীদের অবস্থার পরিবর্তন হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২০ ০২:২৮
Share: Save:

তিনি ছুটি নিয়েছিলেন হাসপাতাল সুপারের কাছ থেকে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও জানিয়ে দিয়েছিলেন, বুধবার তিনি থাকছেন না, ফলে ডিউটি করতে পারবেন না। তার পরেও কেন ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে ওই দিন কোভিড হাসপাতালে ডিউটি দেওয়া হল এবং কেনই বা তাঁকে ‘শো-কজ়’ করা হল, সেই প্রশ্ন তুলছেন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের অনেকেই। তাঁদের প্রশ্ন, গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালের পরিকাঠানো নিয়ে সরব হওয়াতেই কি জেলা হাসপাতালের দুই বর্ষীয়ান চিকিৎসক কর্তাদের কোপে পড়লেন?

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত ছুটি নিয়েছিলেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ব্রজেশ্বরবাবু। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, তখন ঠিক ছিল যে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বৃহস্পতি থেকে রবিবার পর্যন্ত ওই কোভিড হাসপাতালে ডিউটি করবেন। হাসপাতাল সুপার, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) ও অন্য কর্তাদের উপস্থিতিতেই সেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই মতোই বুধবার পর্যন্ত পারিবারিক কারণে ব্রজেশ্বরবাবু ছুটি নেন। ছুটি মঞ্জুর করার ক্ষমতা সুপারের। তাঁর কাছ থেকে ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে আর কোনও আলোচনা না করেই জেলার কর্তারা বুধবার দিনটাকে ডিউটির তালিকায় যুক্ত করে দেন। এ বং সেই দিনই ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায় ও বিনোদকুমার দাসের ডিউটি দেওয়া হয়।

জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের দাবি, “বুধবার ডিউটির কথা জানার পরেই ব্রজেশ্বরদা সিএমওএইচকে হোয়াটসঅ্যাপ করে ছুটির বিষয়টি জানিয়ে দেন। এবং তাঁর কথা মতোই সুপারের সঙ্গে কথা বলে আবার সিএমওএইচ-কে জানান। এর পরেও তাঁকে সেই বুধবার সকালেই ডিউটি দেওয়াই বলে দিচ্ছে, এর পিছনের খেলাটা আসলে কী।” চিকিৎসকদের একাংশের আরও প্রশ্ন, বিনোদকুমার দাসকে একই দিনে শক্তিনগর জেলা হাসপাকাল ও কোভিড হাসপাতালে ‘অন কল ডিউটি’-ই বা দেওয়া হল কেন? ঘটনাচক্রে, এই দুই সিনিয়র ডাক্তারই প্রথম থেকে গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালের সিসিইউ-সহ নানা পরিকাঠামোগত অব্যবস্থা নিয়ে সরব ছিলেন।

কোভিড ডিউটিতে যুক্ত চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সিসিইউ-এ ২৪ ঘণ্টাই ভেন্টিলেটর চালানোর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সিসিইউ মেডিক্যাল অফিসার, নার্স ও টেকনিশিয়ান রাখা নিয়ম। কারণ সেখানে প্রতি মুহূর্তে রোগীদের অবস্থার পরিবর্তন হয়। জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালে সেই ব্যবস্থা নেই। জেলা হাসপাতালের এক জন করে সিসিইউ-এর চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানকে ২৪ ঘণ্টা করে টানা সাত দিন ‘অন কল ডিউটি’ দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন পড়লে তাঁরা আসবেন। এই নিয়েও দুই সিনিয়র চিকিৎসক সরব হয়েছিলেন বলে তাঁদের দাবি।

ব্রজেশ্বরবাবু বা বিনোদবাবু অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সুপার সোমনাথ ভট্টাচার্যকে বারবার কোন করেও পাওয়া যায়নি।

তবে রবিবার সিএমওএইচ অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্দিষ্ট কারণে ওই দুই চিকিৎসককে শো-কজ় করা হয়েছে। তাঁরা জবাবও দিয়েছেন। এ নিয়ে কে কী জল্পনা করছএন, তা আমার কাছে অর্থহীন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Holiday Doctors Treatment Krishnagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE