সামাজিক দূরত্ব বিধি নেই, নেই মাস্কও। নিজস্ব চিত্র
গত জুন মাসের ৮ তারিখ সমস্ত ধর্মস্থান ও উপাসনালয় খুলে দেয় সরকার। যদিও প্রথম দিকে মুর্শিদাবাদ জেলার একাধিক মন্দির কর্তৃপক্ষই মন্দির খুলতে চাননি। আবার যাঁরা খুলেছিলেন, তাঁরা সামজিক দূরত্ব বিধি মানছিলেন কড়া ভাবেই। মুখে মাস্ক দিয়ে তবে মন্দিরে প্রবেশ করা যাচ্ছিল। হাতে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে তবে অঞ্জলি দেওয়া। এমনকি জেলার কয়েকটি মন্দির কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে আনা ফলফুলও নিচ্ছিলেন না। তবে, এখন সেই নিয়মের বদল ঘটেছে। এখন অনেকে সরকারি সমস্ত নির্দেশিকা মানছেন, আবার কেউ সরকারি নির্দেশিকাকে তোয়াক্কা না করেই জমায়তে থেকে পুজো-পাঠ করছেন।
এ দিন যেমন, নবগ্রামের কিরীটেশ্বরী মন্দিরে মঙ্গলবার উপলক্ষে পুজো দিতে এসেছিলেন সামান্য কিছু লোকজন। তাঁদের দু’জন করে মন্দিরে প্রবেশ করিয়ে হাতে স্যানিটাইজ়ার দিয়ে মুখে মাস্ক পরিয়ে পুজো দেওয়ানো হয়। এমনকি পুজো দিতে আসা লোকজনের গোটা ফল বেদির উপরে রেখে পুজো করে সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হয়। মন্দিরের সেবাইত দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রথমত এখন লোকজন তো একেবারেই নেই। তা ছাড়া এখনও আমরা বিশেষ পুজোপাঠ বন্ধই রেখেছি। এখন যারা মন্দিরে আসছেন তাঁরা সকলেই গ্রামের লোক। তবুও সমস্ত নিয়ম মেনেই সবটা করা হচ্ছে মন্দিরে।’’
কিন্তু লালবাগের জঙ্গলী কালি মন্দিরে মঙ্গলবার উপলক্ষে পুজো দিতে এসেছিলেন বহু মানুষ। তাঁদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ববিধির তো কোনও বালাই নেই। একাধিক জনের মুখে ছিল না মাস্কও। এর মধ্যেই একেবারে একে অপরের গায়ে লেগে নাট মন্দিরের মেঝেতে বসে ছিলেন পুজো দিতে আসা সাধারণ মানুষ। তার মাঝেই হোম করে চলেছেন জঙ্গলী কালি মন্দিরের পুরোহিত।
এদিন জঙ্গলীকালি মন্দিরের পুরোহিত বাপ্পা চক্রবর্তী অবশ্য নিয়ম না মানার কথা অস্বীকার করেন তিনি বলেন, ‘‘লকডাউন কাটলেও ভিড় তেমন নেই। মানুষজন খুব কমই আসছে। মন্দিরে সব নিয়মই মানা হচ্ছে।’’ তবে অসচেতনতার চিত্র এদিন দেখা গেল অন্য মন্দিরেও।
লালবাগ মহকুমার শহরাঞ্চলের মসজিদগুলো সহ গ্রামাঞ্চলের কিছু মসজিদ সমস্ত নিয়ম মেনে চলছে। কিন্তু কোথাও নিয়ম ততটা মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। মুর্শিদাবাদ জেলা ইমাম সংগঠনের সম্পাদক আব্দুর রেজ্জাক। তিনি বলছেন, ‘‘আমরা সকলকে প্রচার করে বলছি যে বাড়িতে বসেই নমাজ পড়ুন। আমাদের ইমামদের নিয়ে প্রচারও করছি।’’
এদিন লালবাগের পুরোহিত সংগঠনের সম্পাদক প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দেখুন, সকলকে নিয়ম মানার জন্য সচেতন আমরা করছি। আমরা পৌরোহিত্য করি। সকলকে বুঝতে হবে সমাজের মানুষ আমাদের অনুসরণ করে। কাজেই আমরাই যদি নিয়ম না মানি তাহলে কিভাবে হবে।"
এদিন মুর্শিদাবাদের জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘বিভিন্ন মন্দির মসজিদে আমাদের প্রচার চলছে। মসজিদগুলোয় ইমামদের দিয়ে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। আশা করি, সাধারণ মানুষও সচেতন হবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy