মির্জাপুরে স্কুল ভবনের বেহাল দশা। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে স্কুল ভবনের একাংশ। আতঙ্কে তাই ক্লাস বন্ধ করে দিতে হল রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লকের ধলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বিপদের আশঙ্কায় ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাতেও ভরসা পাচ্ছেন না অভিভাবকেরা।
মাস তিনেক ধরে ঘরে তালা ঝুলিয়ে কোনওরকমে বারান্দায় চলছে ক্লাস। ফলে ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতির সংখ্যাও নেমে এসেছে ৬০ শতাংশে।
১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই প্রাথমিক স্কুলে এখন ২৬৮ জন ছাত্র ছাত্রী ও ৪ জন শিক্ষক। শিশু শ্রেণি থেকে চতুর্থ পর্যন্ত পাঁচটি শ্রেণি। কিন্তু বছর চারেক ধরেই স্কুলের তিনটি ঘরে ফাটল ধরতে শুরু করে। ক্রমশ সেই ফাটল বাড়তে থাকে চারি দিকেই। এখন তা ভয়াবহ আকার নেওয়ায় ঘরের মধ্যে ক্লাস করার রীতিই উঠে গেছে দ্বিতীয় ও শিশু শ্রেণিতে। এমনকি ছেলেরা যাতে ঘরেও না ঢোকে সে জনিয তালা বন্ধ রাখতে হয়েছে ঘরগুলি।
অভিভাবক সফিয়া বিবি বলছেন, “ঘরের বাইরে বারান্দা, সেটাও তো পুরোনো ভবনেরই অঙ্গ। মেয়ে এসে বলে একটু ছুটোছুটি করলেই দেওয়াল নাকি এমন ভাবে কাঁপে যেন মনে হয় এখনই ভেঙে পড়বে। বারান্দাতে ক্লাস হলেও তাই আতঙ্ক কাটে না। ঘর ভেঙে পড়লে ছেলেরা বারান্দায় থাকলে কি রেহাই মিলবে? ভয়ে আমার মত অনেকেই স্কুলে পাঠাই না ছেলে মেয়েদের।”
স্কুলে মাস তিনেক আগে যোগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আওলাদাদ আলি। গ্রামেরই বাসিন্দা তিনি। তিনি বলেন, ‘‘মাস তিনেক আগে স্কুলে এসে দেখি শ্রেণি কক্ষগুলির এই বিপজ্জনক অবস্থা। পূর্বতন প্রধান শিক্ষক বহুবার জানিয়েছেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে। একসময় আতঙ্কে স্কুলে ছাত্র ছাত্রীর উপস্থিতি নেমে আসে ৪০ শতাংশেরও নীচে। ঘর তিনটিকে বন্ধ করে দিয়ে বারান্দায় ক্লাস শুরু করা হয়েছে তাই। দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৬৮ জন ও শিশু শ্রেণিতে ২৯ জন ছাত্র ছাত্রীকে এখন বারান্দায় বসিয়ে ক্লাস করাতে হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, “তা ছাড়া সাত জনের জায়গায় ৪ জন শিক্ষক। তাতেও কোনও না কোনও কারণে গড়ে এক জন স্কুলে অনুপস্থিত থাকেই বিভিন্ন কাজের জন্য। ফলে কোনও ছাত্রছাত্রী বারান্দা থেকে বেরিয়ে গেলে তা খেয়াল রাখা মুস্কিল।”
রঘুনাথগঞ্জ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রশান্ত সর্দার বলছেন, “ধলো স্কুলের এই দুরবস্থার কথা শুনেছি। জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদকেও তা জানানো হয়েছে ।কিন্তু এখনও তাদের কাছ থেকে কোনও উত্তর মেলেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy