সে আসিতেছে। শুক্রবার দুপুরে মেঘে ঢাকা বহরমপুর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
শেষতক পথ বদলালো ফণী! ওড়িশা থেকে দীঘাতট ছুঁয়ে যে ঘূর্ণীঝড় রাজ্যের উপকুল বরাবর ধেয়ে যাওয়ার কথা ছিল প্রতিবেশী বাংলাদেশের দিকে। মৌসম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, তা গতি পথ বদলে পূর্ব মেদিনীপুর-হুগলি-বর্ধমান হয়ে বাংলাদেশের সীমান্তের দিকে এগিয়ে যাবে ঠিকই, তবে তা নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার উপর দিয়ে। যার ফলে ওই দুই জেলার সংলগ্ন বাংলাদেশের কুষ্টিয়া এবং রাজশাহী জেলায় ঝড়ের দাপট থাকবে।
তবে আবহাওয়াবিদেরা অভয় দিয়েছেন, ভূমিতে নেমে আসার পরে ঝড়ের গতিবেগ অনেক কমে যাবে ফণীর। নদিয়া-মুর্শিদাবাদের কাছে আজ ভোরে ফণী যখন পৌঁছবে তখন তার গতি ৯০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় দাঁড়াবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। তবে সে ধাক্কা তড়িঘড়ি সামাল দেওয়াও যে খুব সহজ সাধ্য হবে না, তা কবুল করেছেন জেলা প্রশাসন। অবশ্য সে ব্যাপারে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছে দুই জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদে সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে হাওয়া। সেই হাওয়ার গতিই আজ ভোর থেকে ক্রমশ বাড়বে বলে আশঙ্কা।
জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, ‘‘শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী শুক্রবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদে ফণী আছড়ে পড়তে পারে। নদিয়া-মুর্শিদাবাদের সীমান্ত এলাকায় প্রভাব পড়তে পারে সব থেকে বেশি’’ এ দিন সকাল থেকেই জিয়াগঞ্জ, কান্দি এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। দুপুরের পর থেকে তা ছড়িয়ে পড়ে বহরমপুর, ডোমকল, জলঙ্গি-সহ বিভিন্ন এলাকায়। কাঁচা বাড়ি ছেড়ে প্রতিবেশীর পাকা বাড়ি কিংবা ফ্লাড শেল্টারে পৌঁছে দেওয়াও হয়েছে। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার পক্ষ থেকে ভাগীরথীর পাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে উঠে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কৃষি দফতর মাইকে প্রচার করে বলেছে মাঠের ধান ৮০ শতাংশ পেকে গেলে তা যেন কেটে নেওয়া হয়। এ ছাড়া পানের বরোজের খুঁটি শক্তপোক্ত করতে বলা হয়েছে, লতানো আনাজ যেমন পটল, ঝিঙে, সিম-সহ অনেক আনাজ মাচায় চাষ হচ্ছে। ওই সব মাচার খুঁটিকে শক্তপোক্ত করতে বলা হয়েছে। জেলায় প্রায় ৮৮ হাজার হেক্টর ধান চাষ হয়েছে, যার ৮০ শতাংশ এখনও মাঠেই রয়েছে। এছাড়া ১২ হাজার হেক্টর আনাজ চাষ রয়েছে। প্রায় ২২ হাজার হেক্টর আম বাগান, ১২ হাজার হেক্টর জমিতে লিচু চাষ রয়েছে। ফণীর কারণে সে সবের ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রশাসনিক ভবনে ২৪ ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখানকার ফোন নম্বর হল ০৩৪৮২-২৫০১৩৫। জেলাবাসী এই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy