প্রতীকী ছবি।
লেপকম্বলে রোদ খাইয়ে, ভাঁজে-ভাঁজে ন্যাপথালিন বল দিয়ে তুলে রাখার পর্ব যখন প্রায় শেষের মুখে তখনই অকাল বৃষ্টির হাত ধরে আবার ফিরল শীত।
এমনিতে শীত বাঙালির ভালবাসার জিনিস, কিন্তু তার মতিগতি এমন খ্যাপাটে হওয়ায় আপাতত আম-বাঙালি বিভ্রান্ত। ভরা বসন্তে শীত শুধু নিজে ফিরেছে তা নয়, সঙ্গে করে গুচ্ছ রোগবালাই, জ্বরজারি সঙ্গে এনে বিপদ বাড়িয়েছে। ফলে এক দিকে বোঁচকা বাঁধা শীতের কাপড় আবার নামাতে হচ্ছে আর অন্য দিকে ছুটতে হচ্ছে ডাক্তারের চেম্বারে।
গত শনিবারের কথাই ধরা যাক। রোদে দাঁড়াতে অসুবিধা হচ্ছিল, দুপুরে ছাতা নিয়ে বেরিয়েছিলেন অনেকেই, ফ্যান চালাতে হচ্ছিল ঘরে। আবার রবিবার থেকেই আকাশের মুখ ভার। কখনও মেঘ কখনও রোদ্দুর। বিকেলের পর এলোমেলো হাওয়া। সন্ধ্যায় ঝুপ করে তিন-চার ডিগ্রি নেমে গেল তাপমাত্রা। রাত বাড়তেই জেলা জুড়ে শুরু হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। সঙ্গে জোরালো হাওয়া। সোমবার সকালে ঘরের বাইরে পা ফেলতেই সকলে বুঝলেন, সহজে মায়া কাটাতে পারছে না শীত। ফের গায়ে উঠল চাদর,মাফলার।
আর এই কখনও গরম, কখনও ঠাণ্ডার টানাপোড়েনে চাঙ্গা হয়ে উঠল রাজ্যের জীবাণু। তার জেরে ঘরে-ঘরে সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি। সংক্রমণে নাজেহাল মানুষের লম্বা ভিড় চিকিৎসকের চেম্বারে। তার সঙ্গে রয়েছে চিকেন পক্স, হাম এবং পেটের গোলমালও। নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের প্রাক্তন চিকিৎসক মানস চক্রবর্তী বলেন, “আগে আমরা স্কুলে পড়েছি, পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ। কিন্তু এখন তো দেখছি রাজস্থানের মরু অঞ্চলের মতো। দুপুরে তিরিশ তো রাতে বারো! তাপমাত্রার এই ওঠা-পড়ার সঙ্গে আমাদের শরীর মানাতে পারছে না। সকালে রাস্তায় বের হলে ঘামে জামা ভিজে যাচ্ছে। ফ্যান চলছে এবং একাধিক বার স্নান করতে হচ্ছে। রাতেও হয়তো জানলা খুলে কিংবা গায়ে চাদর না দিয়েই ঘুমোচ্ছেন অনেকে। কিন্তু মাঝরাতের পর হঠাৎ তাপমাত্রা নামছে। ঘুমের মধ্যেই ঠাণ্ডা লেগে যাচ্ছে। মানুষ অসুখে পড়ছেন।” গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও ঠাণ্ডা হাওয়ায় তা বেড়েছে।
যাতে ঠাণ্ডা না লাগে সেই চেষ্টা করতে বলছেন চিকিৎসকেরা। শিশু এবং বয়স্কদের এখনই হালকা পোশাক পড়ার দরকার নেই। স্নান খুব সকালে বা বেশি বেলায় না করাই ভাল। রাতে তো একেবারে নয়। গরম লাগছে বলে ফ্যান বা এসি চালানোর সময় এখনও আসেনি। কাশি হলে প্রথমে বাড়িতে লবঙ্গ, তুলসী পাতা, আদা, যষ্টিমধু, নুন জলে গার্গল, গরম জলে ভেপার নেওয়া ইত্যাদি করা দেখা যেতে পারে। এতে কাজ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রথমেই নিজের থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রবণতায় রাশ টানতে বলেছেন চিকিৎসকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy