মৃত কমল ছাজের। নিজস্ব চিত্র
পুজোর আগে বাডি়র লোক থেকে পাড়ার সঙ্গী-সাথী সকলেই বলেছিল চুল কাটাতে। কিন্তু সে রাজি হয়নি। মাথা ভর্তি কোঁকড়ানো লম্বা চুল তার পছন্দ ছিল। তাই পুজোর মুখে সহপাঠী থেকে পাড়ার সঙ্গী-সাথী সকলেই যখন পার্লারে চুল কাটাতে ব্যস্ত, তখন সেখান থেকে দূরে সরে থেকেছে বেসরকারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী কমল ছাজের (১০)। প্রতিমা বিসর্জনে গিয়ে জেনারেটরের সাথে ওড়না ও মাথার চুল জড়িয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বালিকার। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে সালার থানার সালার মহাজনপট্টিতে।
ওই ঘটনায় পুজোর আনন্দ নিমেষে শোকে পরিণত হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দশমীর দুপুরে এলাকার একটি প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। লছিমনভ্যানের উপরে জেনারেটর চাপিয়ে সাউন্ড বক্স সহযোগে বিসর্জনের শোভাযাত্রা যাচ্ছিল। তাতে শামিল হয়েছিল ওই বালিকাও। ময় ওই বালিকাও ছিল। শোভাযাত্রার সঙ্গে দীর্ঘ পথ হেঁটে যাওয়ার ফলে ওই বালিকা ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং জেনারেটরের থাকা লছিমনভ্যানের উপরে চড়ে বসে। সেই সময়ে আচমকা তার ওড়না ও মাথার চুল জেনারেটরে পাখার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
সালার থানার ওসি আব্দুস সালাম শেখ জানান, দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তবে অসতর্কতার কারণেই ওই বিপত্তি ঘটেছে। গোটা বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে। খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠান হয়েছে কান্দি মহকুমা হাসপাতাল মর্গে।
ঘটনার কিছু ক্ষণ আগেই শোভাযাত্রার সাউন্ড বক্সের গানের তালে তালে পাড়ার সঙ্গীদের সঙ্গে নাচতে দেখেছেন অনেকেই। কিন্তু তার মধ্যে কখন ক্লান্ত হয়ে সকলের নজর এড়িয়ে জেনারেটর থাকা লছিমন ভ্যানে চেপে বসে ছিল কমল, তা কেউ খেয়াল করেনি। এ দিকে শোভাযাত্রার আনন্দ মুহূর্তের মধ্যে শোকে পরিণত হওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মা সঙ্গীতা ছাজের। মেয়ের মৃত্যুতে ঘন ঘন অচৈতন্য হয়ে পড়ছেন তিনি। ওই বালিকার বাবা পেশায় মুদি ব্যবসায়ী শান্তিলালা ছাজের কোনও কথা বলার মত অবস্থায় নেই। তিনি থম মেরে গিয়েছেন। প্রতিবেশী সুমন্ত সাহা বলছেন, “পুজোর চারদিন ধরে নতুন জামা পরে কমল মণ্ডপ দাপিয়েছে। পুজোর কয়েক দিন সারাক্ষণ হাসি মুখে মণ্ডপ চত্বরেই দেখা গিয়েছে। এ ভাবে যে সব শেষ হয়ে যাবে ভাবতেই পারেনি কেউ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy