চলছে আগুন নেভানোর কাজ
কখনও সরকারি হাসপাতাল কখনও বা বেসরকারি নার্সিংহোম— মুর্শিদাবাদে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের বিরাম নেই।
মঙ্গলবার, রঘুনাথগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে আগুন লাগার ঘটনা সেই তালিকায় শেষ সংযোজন।
এ দিন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ রঘুনাথগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড কাছে ওই নার্সিংহোমের এক তলা হঠাৎ গলগল করে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। নার্সিংহোমের অপারেশন থিয়েটারের তখন তিন জন প্রসূতি অস্ত্রোপচারের পরে কিছুটা আচ্ছন্ন অবস্থায় বেডে শুয়ে। তড়িঘড়ি তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নার্সিংহোমের বাইরে। ধোঁয়া ততক্ষণে উপরে উঠতে শুরু করেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ধোঁয়ায় আড়ালে চলে যায় নার্সিংহোম।
বেসরকারি হাসপাতালটির দো-তলা এবং তিন-তলায় তখন আরও বেশ কিছু রোগী ভর্তি। স্থানীয় বাসিন্দারাই তাঁদের প্রায় পাঁজকোলা করে আশপাশের নার্সিংহোমে নিয়ে যান। কয়েক জনকে পাঠানো হয় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে। তবে, খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ধুলিয়ান থেকে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওই নার্সিংহোমের চিকিৎসক তথা কর্তা চয়ন মাঝি বলেন, ‘‘আমি তখন, সদ্য এক প্রসূতির সিজার করে সেলাই করছি, এমন সময় দেখি ধোঁয়া।’’ চিকিৎসক এবং নার্সিংহোমের কর্মীরা যখন কী করবেন বুঝতে পারছেন না তখনই এগিয়ে আসেন এলাকার জনা কয়েক যুবক। দরজা ঠেলে হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকে তাঁরাই রোগীদের বাইরে বের করে আনেন। ফরাক্কার অর্জুনপুরের নেসনু খাতুন বলছেন, ‘‘আমি তো ভাবলাম এই শেষ! বাচ্চাটাকে বুকে জড়িয়ে আমি হাউ হাউ করে কাঁদছি, তখনই কয়েক জন আমাদের বের করে নিয়ে গেল।’’
তবে, অভিযোগ, আগুন লাগার পরে নার্সিংহোমের তরফে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। কর্মীদের অনেককেই তড়িঘড়ি সরে পড়তেও দেখা গিয়েছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নার্সিংহোমের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা কেমন ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ধুলিয়ান দমকল কেন্দ্রের ওসি বিষ্ণুপদ রায় জানান, নার্সিংহোমের নিচের তলায় থাকা সিটি স্ক্যান মেশিনই ছিল আগুনের উৎস। রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি সৈকত রায় বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও মামলা দায়ের হয়নি। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy