ভোটের বাজারে আইসক্রিমের রং দেখে চমকে ওঠেন নওদার বোচাডাঙা গ্রামের ভোটারেরা। সোমবার নওদায় ছিল উপনির্বাচন। চাঁদিফাটা রোদ-গরমের মধ্যে ভোটের লম্বা লাইন ছেড়ে নেমে আসতেই বোচাডাঙা বুথের বাইরে সত্তরোর্ধ্ব সালাম শেখের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল আইসক্রিম। দাদুর হাতে আইসক্রিম দেখে সেদিকে তাকিয়ে সাত বছরের নাতি সেলিম। কেউ এক জন তাকেও একটা আইসক্রিম এনে দেয়। নাতি এক গাল হেসে আইসক্রিমে কামড় দিতেই সালাম শেখের জিজ্ঞাসা—‘আইসক্রিমের রং সবুজ কেন?’ কানের কাছে ফিসফিস করে এক জন মুচকি হেসে জানান, চাচা তৃণমূলের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে। তাই আইসক্রিমের রংও সবুজ।
নওদার সঙ্গে কান্দি বিধানসভায় এ দিন উপনির্বাচন হয়েছে। ওই দুটি বিধানসভা কেন্দ্রে কোথাও বিলি হয়েছে মিষ্টির প্যাকেট। কোথাও আবার গরম রসগোল্লার সঙ্গে পাউরুটি, মুড়ির সঙ্গে ঘুগনিও বিলি হয়েছে। এমনকি বসিয়ে চা-বিস্কুট খাওয়ানোর পরে বিড়িও পেয়েছেন ভোটারেরা। তবে ওই মিষ্টি মুখ করানো নিয়ে রাজনীতির ময়দান কম গরম হয়নি। বিরোধী দলের নেতারা নির্বাচন কমিশনের কাছে নালিশ ঠুকে দিতে দেরি করেননি। বিরোধীদের অভিযোগ, মিষ্টি খাওয়ানোর নামে ভোটারদের প্রভাবিত করা হচ্ছে। শাসকদলের নেতারা জানাচ্ছেন, নওদায় কংগ্রেস ও বিজেপিও তো ভোটারদের মিষ্টি খাইয়েছে।
নওদার রায়পুরে ভোটারে সংখ্যা সাতশো। তালিকা মিলিয়ে মিষ্টির দোকানে তৃণমূলের তরফে সাতশো প্যাকেটের অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। প্যাকেটে ছিল তিনটে রসগোল্লা, দুটো ছানাবড়া, একটি কেক। কেবল ভোটারেরা নয়, মায়ের হাত ধরে বুথে এসে প্যাকেট নিয়ে নাচতে নাচতে ঘরে ফিরেছে মেয়ে চন্দনা বিশ্বাসও। রায়পুরে যিনি মিষ্টি বিলিয়েছেন, সেই মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য সঞ্জয় হালদার বলছেন, ‘‘এর মধ্যে কোনও রাজনৈতিক গন্ধ খুঁজবেন না। ভোট উৎসবের মিষ্টি মুখ করানো হয়েছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পাটিকাবাড়ি দাসপাড়ায় প্যাকেট নয়, পাউরুটির সঙ্গে মিলেছে গরম রসগোল্লা। সৌজন্যে তৃণমূল। পাল্লা দিতে সেখানেই কংগ্রেস বিলিয়েছে শুকনো পাউরুটি। মিষ্টি নেই কেন? পাটিকাবাড়ি অঞ্চল কংগ্রেসের নেতা বাবর আলি শেখ বলেন, ‘‘মিষ্টি দেওয়ার মতো টাকা আমাদের নেই। ওরা শাসক দল, অনেক টাকা ওদের।’’
কান্দি বিধানসভা এলাকার বাসবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথ থেকে ৪০০ মিটার দুরে ভোটারদের রসগোল্লা বিলিয়েছে তৃণমূল। কান্দি পুর এলাকার ১৩ ওয়ার্ডে ঘুগনি মুড়ি বিলিয়েছে তারা। কান্দি বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী গৌতম রায় বলছেন, ‘‘ভোট উৎসবে মিষ্টি মুখ, মুড়ি ঘুগনি খাওয়ানোর রেওয়াজ রয়েছে। এটাই বাংলার সংস্কৃতি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy