প্রতীকী ছবি।
নাবালিকার বিয়ে রোখা থেকে, পোলিও, ডেঙ্গি কিংবা গম চাষ বন্ধের প্রচার— সব ব্যাপারেই ডাক পড়ে তাঁদের। এ বার ইমামদের কাঁধে ভর করেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসবে উৎসাহ দেওয়া শুরু করল প্রশাসন।
জেলার অনেক প্রসূতি দাইমার ভরসায় বাড়িতে সন্তান প্রসব করছেন। বাড়িতে এই ঝুঁকির প্রসবের অপকারিতার বিষয়ে প্রচার চালাতে ইমাম-মোয়াজ্জিনদের নামাচ্ছে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার বহরমপুরে রবীন্দ্রসদনে ইমামদের সচেতনতার জন্য ডাকা হয়েছিল। সেখানে জেলাশাসক পি উলাগানাথন, অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) অংশুল গুপ্ত, মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস এ বিষয়ে ইমামদের সচেতন করেছেন।
পরিকাঠামো না বাড়িয়ে শুধু সচেতনে কি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসবের পরিমাণ বাড়বে? মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলায় ৬টি নতুন ডেলিভারি পয়েন্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রসূতিদের যাতে দ্রুত নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া যায় তার ম্যাপিং করা হচ্ছে। এ সবের পাশাপাশি ইমাম-মোয়াজ্জিনদের সচেতনতার কাজে নামানো হচ্ছে।’’
বৈঠক শেষে জেলাশাসক বলেন, ‘‘জেলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসবের হার ৯৫.৫ শতাংশ। বাকি ৪.৫ শতাংশ যাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসব করেন, সে বিষয়ে প্রসূতিদের উৎসাহ দিতে ইমামদের সচেতন করা হয়েছে।’’ অল ইন্ডিয়া ইমাম মোয়াজ্জেন অ্যান্ড সোশ্যাল অর্গানাইজেশনের জেলা সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘‘প্রশাসনের অনুরোধে এর আগে আমরা পোলিও থেকে নাবালিকার বিয়ে বন্ধ, ডেঙ্গি, মিশন নির্মল বাংলা, গম চাষ বন্ধের বিষয়ে জেলার মানুষকে সচেতন করেছি। এ বারে প্রসূতিরা যাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসব করেন সে বিষয়ে সচেতন করার অনুরোধ এসেছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আমরা সচেতন করব।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহুর্তে রাজ্যে প্রায় ৯৭.৭ শতাংশ প্রসূতি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসব করেন। সেখানে মুর্শিদাবাদ জেলায় ৯৫.৫ শতাংশ প্রসূতি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসব করেন। বাড়িতে সন্তান প্রসব কমাতে স্বাস্থ্যদফতর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখেছে, জেলার বেশ কিছু অঞ্চল হাসপাতাল থেকে দূরবর্তী এলাকায় হওয়ায় এবং প্রত্যন্ত এলাকার কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে অসুবিধা হয়। সে কারণে বাড়ির লোকজন প্রসূতিদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে চায়না। কাছাকাছি সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করতে জেলায় ফলে ৬ টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নতুন ‘ডেলিভারি পয়েন্ট’ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বছর মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ ব্লকে সব থেকে বেশি প্রসূতি বাড়িতে সন্তান প্রসব করেছে। ওই ব্লকে এবছর গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১০৪১ জন সন্তান বাড়িতে প্রসব করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy