ভাঙচুর করা হল অ্যাম্বুল্যান্স। রবিবার ফুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে শনিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ফুলিয়া। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল। পড়ল বোমাও। এই ঘটনায় রাজ্যের শাসক দলের দুই শিবির একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে নানা পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ চলছিলই। শনিবার দুপুরে ফুলিয়া টাউনশিপ পঞ্চায়েতে একটি বিক্ষোভ হয়। রাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়। ঝামেলা হয় ফুলিয়া টাউনশিপ পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন জায়গায়। ভাঙচুর করা হয় একটি অ্যাম্বুল্যান্সও। পরে ঘটনাস্থলে যায় শান্তিপুর থানার পুলিশ। প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান উৎপল বসাক।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষতিপূরণের জন্য পঞ্চায়েত এলাকার সাতজন বাসিন্দার নামের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। যদিও আরও বেশি মানুষ ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে দাবি ওঠে। সেই দাবিতে বিক্ষোভের সময় শনিবার দুপুরে পঞ্চায়েত অফিস ভাঙচুর হয়। পঞ্চায়েত প্রধান উৎপল, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ বিলাস রায়কে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় যুব তৃণমূল নেতা শুভঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের শিবিরের দিকেই আঙুল তোলেন প্রধান।
দুপুরের ওই ঘটনার পর রাতে একটি দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি শুভঙ্করের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির বাড়িতে হামলা এবং তাঁর টোটো ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। টোটোর চালক সমীর মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি শুভঙ্করের সঙ্গে থেকে কাজ করি। সেই কারণেই প্রধানের ঘনিষ্ঠ লোকজন আমার বাড়িতে হামলা করেছে। আমার টোটো ভেঙে দিয়েছে।’’
এরপর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পাল্টা এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় একটি ক্লাবের অ্যাম্বুল্যান্স ভাঙচুর করা হয়। ওই ঘটনায় যুব নেতা শুভঙ্করের দিকেই আঙুল তুলেছে দলের একাংশ।
হামলার ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। তিনি বলেন, ‘‘শুভঙ্করের লোকজনই এই হামলা করেছে। আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি, প্রাণনাশের আশঙ্কা করছি। ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমি আর দফতরে যাব না। তা দল এবং প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, এখানে দলের সবাই শুভঙ্করের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, শুভঙ্কর শিবিরের অভিযোগ, প্রধানের ঘনিষ্ঠরাই ঝামেলা বাধিয়েছে।
যুব নেতা শুভঙ্কর বলেন, ‘‘আমি কোনও ঝামেলায় ছিলাম না। একজনের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক কর্মীর টোটো ভাঙচুর হয়েছে। কে কোথায় কী ঝামেলা করেছে জানি না। সব ঘটনাই দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’ শান্তিপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন সরকার বলেন, “এই ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। দলীয় ভাবে দেখা হচ্ছে। কোনও রকম দলবিরোধী কাজ বরদাস্ত করা হবে না।’’
শাসক দলের কোন্দলের জেরে এই অশান্তির ঘটনাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘আদর্শ থেকে দূরে সরে গিয়ে নিজেদের মধ্যে কাটমানির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে লড়াই শুরু হলে সেই দলের এই পরিণামই হয়। যার ফল মানুষকে ভুগতে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy