প্রতীকী চিত্র।
কয়েক মাস আগে থেকেই শাসক দলের কোনও-কোনও নেতা দাবি করছিলেন যে, কৃষ্ণনগরের থেকেও বিজেপির জন্য বেশি সম্ভবনাময় কেন্দ্র রানাঘাট। ভোট যত এগিয়েছে ততই আরও জোরদার ভাবে সেই দাবি তুলে ধরতে শুরু করেছিলেন বিজেপি নেতারা।
এখন ভোট শেষ। গণনার আগে দুই যুযুধান পক্ষই মেনে নিচ্ছে যে, একেবারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এ লড়াইয়ে যে কেউ শেষ মুহুর্তে বিপক্ষের জালে বল ঢুকিয়ে শেষ হাসি হাসতেই পারে। কোনও পক্ষই বুক ঠুকে বলতে পারছে না যে, তারাই জিতে নেবেন মানুষের রায়। একটু যেন শঙ্কায় দু’পক্ষই। কোনও উচ্ছ্বাস দেখাতে চাইছেন না কেউ।এমনিতে রানাঘাটের তৃণমূলের প্রার্থী রূপালী বিশ্বাসকে নিয়ে শুরু থেকেই শাসক দলের অন্দরে বিতর্ক ছিল। অনেকেই তাঁকে প্রার্থী হিসাবে মেনে নিতে পারেননি। প্রকাশ্যে সদ্য বিধবা মহিলার বিরোধিতা না-করলেও অনেক তাবড় নেতাকে তাঁর জন্য সে ভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। তার উপরে বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের কিছু নেতার কার্যকলাপ ও দুর্নীতিতে মানুষ ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিল।
পঞ্চায়েত ভোটে বড় এলাকা জুড়ে মানুষ ভোট দিতে না-পারায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাগ জমা হয়েছিল। সিপিএমের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে তৃণমূলের উপরে ক্ষুব্ধ ভোটারেরা শেষ পর্যন্ত বিজেপির দিকে ঝুঁকেছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। আর সেই কারণেই প্রার্থী নিয়ে প্রবল টানাপড়েন সত্ত্বেও শাসক দলকে প্রবল ভাবে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি। একান্ত আলাপচারিতায় সেই কথা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না জেলায় তৃণমূলের একাধিক প্রথম সারির নেতা। শুধু তাই নয়, কেউই বুক ফুলিয়ে বলতে পারছেন না যে, কোনও একটি বিধানসভা এলাকা থেকে দশ হাজারের বেশি ভোটে তাঁদের প্রার্থী এগিয়ে থাকবেন বা লিড দেবেন।
এই লোকসভার সবচেয়ে ‘পজেটিভ’ জায়গা নবদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্রটি। কিন্তু সেখানেও ৫ থেকে ৭ হাজারের বেশি লিড দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে তৃণমূলেরই একটা অংশ। লিড দেওয়ার তালিকায় আছে শঙ্কর সিংহের রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্র। তবে সেখানেও মেরেকেটে ৭ থেকে ৮ হাজার ভোটের বেশি লিড হবে না বলেই মনে করছে তৃণমূলেরই একটা অংশ। রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রও এ বার সে ভাবে আশার আলো দেখাতে পারছে না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অনেকে মনে করছেন, চাকদহ শহর তৃণমূলকে পিছিয়ে দেবে। গ্রামাঞ্চল থেকে লিড এলেও তা খুব বেশি হবে না। শান্তিপুর শহরে খুব বেশি হলে ৩ থেকে ৫ হাজার লিড থাকলেও পঞ্চায়েত এলাকা থেকে ১০ থেকে ১২ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকার প্রবল সম্ভাবনা। তৃণমূল পিছিয়ে থাকতে পারে রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে। সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসতে পারে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে।
তা হলে? বিজেপি নেতারা এক প্রকার নিশ্চিত যে, তাঁরা এই আসলটি নিশ্চিত ভাবে জিতে গিয়েছেন। আবার সমস্ত ধরণের অঙ্ক কষে তৃণমূলের জেলা নেতারা দাবি করছেন, সামান্য ভোটে হলেও তাঁরাই শেষ হাসি হাসবেন। কারণ, প্রার্থী বাছাই নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিজেপির দ্বিধাগ্রস্থ থাকা। মুকুটমণি অধিকারীকে প্রচার শুরু করেও মাঝপথে সরে যেতে হয়েছে মূলত দলীয় নেতাদের ভুল অভ্কের জন্য। জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকারের বিরোধী পক্ষ দলের অন্দরেই যথেষ্ট শক্তিশালী। তাঁরা তাঁকে হারাতে সক্রিয় ছিলেন, এটাও এখন ‘ওপেন সিক্রেট’। তৃণমূলের প্রধান ভরসা বলতে এখন এটাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy