Advertisement
০৫ মে ২০২৪

দীর্ঘদিন পর ভোট দিল গিরিয়া

গিরিয়ায় ভোট ছিল প্রহসন। বাম জমানায় তিন দশক ধরে স্থানীয় দু’টি পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা ভোটের নামে ফিরে পেয়েছেন— সন্ত্রাস, শাসানি, বারুদের গন্ধ। রাজ্যে পালাবদলের পরেও সেই ছবি বদলায়নি।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বিমান হাজরা
গিরিয়া শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৪০
Share: Save:

গিরিয়ায় ভোট ছিল প্রহসন। বাম জমানায় তিন দশক ধরে স্থানীয় দু’টি পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা ভোটের নামে ফিরে পেয়েছেন— সন্ত্রাস, শাসানি, বারুদের গন্ধ। রাজ্যে পালাবদলের পরেও সেই ছবি বদলায়নি।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বুথ পর্যন্ত আসার সুযোগই পাননি তাঁরা। সেই গিরিয়ায় এবার ভোট হল। গিরিয়া এবং সেকেন্দ্রা পঞ্চায়েতের একদা সন্ত্রাসদীর্ণ ১৮টি বুথে এবার স্বতঃস্পূর্তভাবে ভোট দিলেন গ্রামবাসীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া হিসেব অনুযায়ী দুই পঞ্চায়েতের বুথগুলিতে প্রায় ৮৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। যা দেখে আশাবাদী কংগ্রেস। তাদের দাবি, গিরিয়া ও সেকেন্দ্রার বুথগুলিতে এবার তারা ভালই ফল করবে।

রঘুনাথগঞ্জ বিধানসভার ২৮ থেকে ৫৮ নম্বর— এই ৩১টি বুথে এবারও সন্ত্রাসের আশঙ্কা করেছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু সেখানেই এবার উল্টো ছবি। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা প্রকাশ সাহা বলছেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথে ছিল। ফলে সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা করলেও সুবিধা নিতে ব্যর্থ তৃণমূল। আতঙ্ক ভুলে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিয়েছেন। আমরা সর্বত্র এজেন্ট দিতে পারিনি ঠিকই। তা সত্ত্বেও কংগ্রেস ভাল ভোট পাবে।’’

ভোট শান্তিতে হয়েছে, মানছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা সাইদুল মিঞা বকুলও। তবে তাঁর দাবি, “দুই পঞ্চায়েতেই তৃণমূলের ভাল লিড থাকবে।” প্রায় ২৮ হাজার ভোটার রয়েছেন দুই পঞ্চায়েতে। সন্ধ্যায় সরকারি স্তরে চূড়ান্ত হিসেব না মিললেও প্রার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, গড়ে প্রায় ৮৫ শতাংশ ভোট পড়েছে দুই পঞ্চায়েতে। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গিরিয়া এবং সেকেন্দ্রা পঞ্চায়েত রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলই বরাবর নিজেদের ‘দখলে’ রেখেছে। বাম জমানায় দুই পঞ্চায়েতই ছিল সিপিএমের দখলে। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সবক’টি ভোটেই কংগ্রেস আধিপত্য কায়েম করে দুই পঞ্চায়েতে। তবে গিরিয়া-সেকেন্দ্রায় ভোট মানেই, ছিল সন্ত্রাস, বোমাবাজি। এবার তা অদৃশ্য।

দুপুর সাড়ে ১২টা। প্রখর রোদে মোমিনটোলার ফাঁকা বুথ থেকে বেরিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বছর পঞ্চান্নর এক মহিলা। বললেন, “বহু দিন পর এমন শান্তির ভোট দেখলাম। একটা বোমাও পড়েনি কোথাও। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় সব ঠান্ডা।” এতদিন ভোটের কয়েকদিন আগে থেকেই বোমাবাজি শুরু হয়ে যেত। এবার একেবারে উল্টো ছবি। পুলিশের প্রথম থেকেই কড়া নজরদারি ছিল বলে এটা সম্ভব হয়েছে। কংগ্রেস নেতারা জানালেন, সোমবার রাতেও শাসকদলের বাইকবাহিনী এলাকায় দাপায়। তবু ভোটারদের বুথে আসাই তাঁদের ভরসা জোগাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Politics TMC BJP Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE