Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন, বলছেন জলুবাবুই

নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ জুটির ‘ইচ্ছানুসারে’ আসন্ন লোকসভা ভোটে ময়দানে নামতে পারেননি বিজেপির একাধিক প্রবীণ নেতা।

কালীগঞ্জের পাগলাচণ্ডীতে নিজের বাড়িতে জলুবাবু। নিজস্ব চিত্র

কালীগঞ্জের পাগলাচণ্ডীতে নিজের বাড়িতে জলুবাবু। নিজস্ব চিত্র

সন্দীপ পাল 
কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩৬
Share: Save:

তিনি নিজে দাঁড়াতে চাইলেও দল আর তাঁকে প্রার্থী করতে চায়নি। তাই বহু বছর পরে ভোটের বাজারে অখণ্ড অবসর তাঁর। মঙ্গলবার কালীগঞ্জের পাগলাচণ্ডীতে নিজের বাড়িতে বসে ফের প্রার্থী হওয়ার অপূর্ণ ইচ্ছের কথা নিজেই জানালেন কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জলুবাবু।

নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ জুটির ‘ইচ্ছানুসারে’ আসন্ন লোকসভা ভোটে ময়দানে নামতে পারেননি বিজেপির একাধিক প্রবীণ নেতা। যা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন কেউ কেউ। গত লোকসভা ভোট পর্যন্ত ভোটে লড়া মুরলীমনোহর জোশীকেও আর টিকিট দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তিনি সর্বসমক্ষেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বয়সের কারণে বাদ পড়ার তালিকায় আর এক সংযোজন সাতাশি বছরের জলুবাবু, যদিও স্বভাব সৌজন্যে সে ভাবে তিনি ক্ষোভের কথা জানাননি।

এ দিন সকালে বাড়ির বাগানে বেতের চেয়ারে বসে জলুবাবু বলেন, ‘‘আমার ফের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা ছিল। সম্ভবত, বয়সের কথা বিবেচনা করে দল আমাকে প্রার্থী করেনি।’’ বিজেপির একটি সূত্রের খবর, কল্যাণ আরএসএস ঘনিষ্ঠ। তাদের জোরেই তিনি প্রার্থী হয়েছেন। জলুবাবু কোনও দিনই আরএসএস-এর কাছের লোক নন। তাই তাঁর নাম তাঁরা হিসেবে আনেনি। এ নিয়ে কিছুটা অভিমান হয়তো আছে প্রবীণ নেতার। তবে দল ডাকলে যে কৃষ্ণনগরে প্রার্থী কল্যাণ চৌবের সমর্থনে প্রচারে নামবেন, তা

জানাতে ভোলেননি।

কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ার আগে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জেলায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল জলুবাবুর নাম। গত বার এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে তিনি ২৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন তিন নম্বরে দৌড় শেষ করেছিলেন। তবু তাঁর জায়গায় ‘বহিরাগত’ কল্যাণ চৌবে প্রার্থী হওয়ায় বিজেপির নেতাকর্মীদের একটা বড় অংশ ক্ষুব্ধ হন। হতাশায় অনেকেই বলেছিলেন, তাঁরা ভোটে কোনও কাজ করবেন না। তবে, জেলা নেতৃত্ব রাশ টেনে ধরায় তাঁদের বেশির ভাগই এখন প্রচারের কাজে ফিরছেন। জলুবাবুও বলেন, ‘‘দল যেখানে কল্যাণকে প্রার্থী করেছে, সকলেরই উচিত তাঁর হয়ে প্রচারে নামা।’’

যে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে ৩৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে, তা এমনিতে বিজেপির জন্য কঠিন ঠাঁই। ১৯৯৯ সালে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের জোরে জলুবাবু এই কেন্দ্র থেকে জেতেন। তবে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক ছাড়াও তাঁর ব্যক্তিগত পরিচিতি যে একটা ‘ফ্যাক্টর’ তা বিরোধীরাও মানেন। সেই পরিচিতি কি কল্যাণের আছে? জলুবাবু বলেন, ‘‘এটা বলা খুব মুশকিল। তবে কিছুটা প্রভাব তো পড়বেই।’’

কী ভাবে এর মোকাবিলা করবেন কল্যাণ? এ দিন কালীগঞ্জে এসে তিনি বলেন, ‘‘জলুবাবু যদি প্রচারে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বলেন যে তিনি আমার সঙ্গেই আছেন, তা হলেই সাধারণ মানুষ আমাকে

গ্রহণ করবেন।’’

টানা পাঁচ বার কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন জলুবাবু। নতুন প্রার্থী তাঁর ছায়া টপকে যেতে পারেন কি না, তা

বলবে ইভিএম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE