আশ্রয়: মঙ্গলবার হোসেনপুরে। নিজস্ব চিত্র
এ গ্রামে পুজো আসে না। কিন্তু নিয়ম করে প্রতি বছর পুজোর সময় ভাঙন আসে। গত বার গঙ্গার ভাঙনে সব হারিয়ে ওঁরা উঠে এসেছিলেন নদীপাড় থেকে বেশ কিছুটা দূরে। লোকমুখে যে এলাকার নাম হয়ে গিয়েছিল ভাঙাপাড়া। মঙ্গলবার সেই ভাঙাপাড়াও তলিয়ে গেল নদীগর্ভে।
এক বৃষ্টিতে রক্ষা নেই, দোসর হয়েছে ভাঙন। যৌথ আক্রমণে কাহিল ফরাক্কার হোসেনপুর।
গ্রামের বৃদ্ধ গণপতি মণ্ডল বলছেন, “এমন ভাঙন আগে কখনও দেখিনি। চোখের পলকে পাথর দিয়ে বাঁধানো স্পার, বালির বস্তা জলের তোড়ে ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে গেল।”
এমন অবস্থায় কে কাকে সান্ত্বনা দেবেন, কে কার ঘর সামলাবেন কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না। ৬৫ বছরের বৃদ্ধা সপ্তমী বালা ক্লান্ত হয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়েছেন ভ্যানরিকশার উপরে। খোলা আকাশের নীচেই শুয়ে তাঁর সাত মাসের নাতনি।
নদী এখন ধাক্কা দিচ্ছে গ্রামের প্রধান সড়কে । গ্রামকে যে আর বাঁচানো মুশকিল তা বুঝে গিয়েছেন হোসেনপুরের বাসিন্দারা। ফরাক্কা ব্যারাজের এক ইঞ্জিনিয়ার বলছেন, “হোসেনপুরের পশ্চিম পাড়ে গঙ্গার উপর চর পড়েছে বলেই পূর্ব পাড়ে নদীর এই তাণ্ডব এমন ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এই মুহূর্তে তাই আর কিছুই করার নেই।”
ফরাক্কার বিধায়ক কংগ্রেসের মইনুল হকের অভিযোগ, “জুলাই মাসে ১৬ কোটি টাকা খরচ করে হোসেনপুরে ১৮০০ মিটার স্পার বাঁধিয়েছে ফরাক্কা ব্যারাজ। এক মাসও টিকল না সে স্পারের বেশিরভাগ অংশ।’’ মইনুলের দাবি, ‘‘ভাঙনে ভিটেহারাদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিতে হবে ফরাক্কা ব্যারাজকেই। তাদের বহু জমি পড়ে রয়েছে ফরাক্কায়। সেই ফাঁকা জমিতে বসতি গড়ে দিতে হবে তাঁদের।’’
বেনিয়াগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সেলিনা বিবি বলছেন, “ফরাক্কা ব্যারাজ যদি গুরুত্ব দিয়ে সময়ের কাজটা সময়ে করত তা হলে হয়তো বিপর্যয় এত দ্রুত, এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠত না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy