—প্রতীকী ছবি
জানালার পাশে রোগীর বিছানা। সেখান থেকে ইঞ্চি কয়েক দুরে রাতভর জ্বলেছে মশা তাড়ানোর ধূপ। জিলিপির মতো পেঁচিয়ে পড়ে রয়েছে ধুপের ছাই, হ্যাঁ বিকেলেও।
ডেঙ্গির জুজু তাড়াতে এখন হাসপাতালের ওয়ার্ডে মাথা ঝোঁকালেই আনাচে কানাচে এমনই পেঁচাল জিলিপি-ছাই চোখে পড়বে। কিন্তু প্রশ্ননটা হল— আগুন না ডেঙ্গি কোনটা বেশি ভয়ঙ্কর।
সদ্য বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডোমকল হাসপাতালে বদলি হয়ে এসেছেন এক নার্স। বলছেন, ‘‘না বাপু, আগুন ঢের ভয়ঙ্কর। মেডিক্যালের সেই পোড়া রাতে আমি ছিলাম। ভাবলে এখনও শিউরে উঠি মাঝে মাঝে।’’
শিউরে ওঠারই কথা। মশা মারতে গিয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলা কি ঠিক হচ্ছে? প্রশ্নটা সরকারি হাসপাতালে ঘোরাফেরা করছে বেশ কিছু দিন ধরেই। এর জেরে কান্দি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড কোনওরকমে সামাল দেওয়া গিয়েছিল, কিন্তু বার বার কি তা যাবে?
তা হলে আসুন, ডোমকলের হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপন ব্যূবস্থার হালটা একটু খতিয়ে দেখি।
সদ্য তৈরি নীল-সাদা ডুরে হাসপাতালের চেহারা বাইরে থেকে দেখলে সত্যিই ভরসা জোগায়। একটি বেসরকারি সংস্থার দায়িত্বে আগুন নেভানোর প্রযুক্তিও হাসপাতালের আনাচকানাচে চোখে পড়ে। কিন্তু তার ব্যবহার জানেন তো নার্স থেকে ওয়ার্ড বয়— সকলে।
হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সত্যি কথা বলতে আমরাও ভাল করে জানি না ওই মুহূর্তে ঠিক কি করতে হবে। এ ব্যাপারে ঘন ঘন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হলে ভাল হত।’’ একই কথা বলছেন, হাসপাতালের আয়ারাও—‘‘আগুন লাগলে ওই সব যন্ত্র কাজে দেবে বলে শুনেছি। প্রশিক্ষণ হয়েছে, তবে খুব ভাল করে শিখেছি, এমন বলতে পারি না।’’
তা হলে?
হাসপাতালের সুপার প্রবীর মাণ্ডি বলেন, ‘‘আগুন নিয়ে আমরা সব সময়ে সতর্ক আছি। প্রাথমিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’ তা বলে মশা মারার কয়েলের এমন যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে তিনিও অস্বস্তিতে। জানাচ্ছেন, অনেক রোগীই মশারি খাটাতে পারেন না। চান না-ও অনেকে।
তিনি বলছেন, ‘‘রোগীর বাড়ির লোক হাসপাতালে এসেই একটা কয়েল জ্বেলে বসে থাকে, বারণ করলেও শোনে না। উল্টে চোখ রাঙায়।’’
কয়েলের সেই আঁচেই বুঝি চুপ করে আছে আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy