Advertisement
০৪ জুন ২০২৪

ডিনের ঘনিষ্ঠ হলেই সুবিধা! ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা

ডিনেরা হঠাৎ ছাত্রদের একাংশের শত্রু হয়ে উঠলেন কেন?

বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

মনিরুল শেখ
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:২০
Share: Save:

দুই ডিনকে কেন্দ্র করেই মূলত বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের একাংশের ক্ষোভের পারদ চড়ছিল। ‘চলো পাল্টাই বিসিকেভি’ স্লোগান তুলে তাঁরা উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থান শুরু করেন। তাঁদের প্রধান দাবিই ছিল, ডিন অব স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার গৌতম চক্রবর্তী ও কৃষি অনুষদের ডিন শ্রীকান্ত দাসকে সরাতে হবে। আন্দোলনের জেরে উপাচার্য ওই দু’জনকে সরানোর লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও তাঁরা নিজ-নিজ পদে থেকে যাওয়ায় কার্যত ফুঁসছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্রেরা।

কিন্তু ডিনেরা হঠাৎ ছাত্রদের একাংশের শত্রু হয়ে উঠলেন কেন?

ডিন-বিরোধী পড়ুয়াদের অভিযোগ, ক্ষোভ অনেক দিন ধরেই জমছিল। যে পড়ুয়ারা দুই ডিনের ‘ভজনা’ করেন, তাঁদের সুরে সুর মেলান, তাঁরা তোষামদের পুরস্কার হিসাবে বেছেবেছে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা ও গবেষণা শুরু করার অনুমোদন পান। দামি প্রজেক্টে বিপুল টাকা পারিশ্রমিকের কাজ পান। যদিও, অভিযুক্ত দুই ডিন-ই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিক্ষুব্ধ ছাত্রেরা কিন্তু দাবি করেছেন, কিছু দিন আগেই শ্রীকান্তবাবু ঘনিষ্ঠ মৃত্তিকা বিজ্ঞানের এক শিক্ষক কয়েক কোটি টাকার প্রজেক্ট পেয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, অনেক ছাত্রই ডিনদের তোল্লাই দিতে চাইতেন না। বিভিন্ন জায়গায় বঞ্চিত হয়ে তাঁরা বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছেন। তাঁরাই বিসিকেভির দেওয়ালে লিখেছেন—‘চাকরি চাও? তা হলে পড়াশোনা কোরো না, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে থাক।’

‘চলো পাল্টাই’-পন্থী এক ছাত্রের কথায়, ‘‘দুই ডিনের অনুগত ছাত্রেরা এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন যে, মাতঙ্গিনী হস্টেলের এক ছাত্রী সম্প্রতি হুমকি দেয়, ডিনেদের অনুগত নয় এমন পড়ুয়ারা কী ভাবে স্নাতকোত্তরে পড়ার সুযোগ পায় তা তিনি দেখে নেবেন!’’ এই সব অভিযোগ সম্পর্কে গৌতম চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘মন দিয়ে নিজের কাজ করি। দায়িত্ব পালন করি। নিরপেক্ষতা বজায় রাখি। ডিন হিসাবে আমার কিছু বেশি টাকা পাওয়ার কথা, সেটাও নিই না। তার পরেও কেন আমার বিরুদ্ধে এই সব কথা উঠছে জানি না।’’ আর শ্রীকান্ত দাসের উক্তি, ‘‘আমার কাছে যাঁরা গবেষণা করেন আর যাঁরা করেন না, সকলকে এক চোখে দেখি। আমি ডিন, সব ছাত্র আমার কাছে সমান এটা সবসময় মাথায় রাখি। মিথ্যা অভিযোগ উঠছে।’’

১২ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীদের উপর বহিরাগতদের হামলার জেরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক মহল ও ছাত্রদের একাংশের অভিযোগ, হরিণঘাটা শহরের টিএমসিপির সভাপতি রাকেশ পাড়ুই অনেক দিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে নিজের ক্ষমতা বাড়াতে চাইছিলেন। তিনিই এলাকার কিছু টোটোচালককে ওই হামলা চালাতে নির্দেশ দেন এবং নিজে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে তাঁদের পরিচালনা করেছেন। রাকেশ দাবি করেন, ‘‘আমার বাড়ি বিসিকেভি-র কাছে। ঝামেলা শুরু হওয়ার পর অন্য অনেকের মতো আমিও কৌতূহলবশত সেখানে গিয়ে গেটের বাইরে দাঁড়িয়েছিলাম। কারা কাদের নিয়ে এসে হামলা চালিয়েছে আমি জানি না।’’

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সরাসরি: ‘মাছ ধরতে শেখানো উচিত’, আক্রমণ দেবজিতের

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BCKV Students Fuming Dean
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE