প্রতীকী ছবি।
ঠেলার নাম তৃণমূল ভবন! বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে যুযুধান দুই পক্ষের আকচাআকচি যখন হাতাহাতির মূহুর্তে থমকে ঠিক তখনই বার্তা এল কলকাতা থেকে। শীর্য নেতৃত্বের ধমক খেয়ে শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে গেলেন ওই পদের দুই দাবিদার বাবু শেখ এবং ইমানুল শেখ। মাঝখান থেকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল প্রায় হারিয়ে যাওয়া সুকুমার অধিকারীর নাম।
এ দিন ভোটাভুটি দুরে থাক, বাবু শেখ নিজেই সুকুমারবাবুর নাম প্রস্তাব করায় দু’পক্ষই তা মেনে নেয়। অথচ কয়েক ঘণ্টা আগেও প্রাক্তন জেলা সভাপতি মান্নান হোসেনের ঘনিষ্ঠ অনুগামী, মুর্শিদাবাদ জেলা হোলসেল কনজিউমার্স কো-অপারেটিভের চেয়ারম্যান সুকুমার অধিকারীর নাম ধর্তব্যের মধ্যেই ছিল না। তাঁর নাম যে দু-এক বার ভেসে ওঠেনি এমন নয়, কিন্তু কোনও গোষ্ঠীতেই না থাকায় তাঁকে নিয়ে আলোচনাই বেশি দূর গড়ায়নি।
তৃনমূলের অন্দরের খবর, গভীর রাতে দলের মহকুমা সভাপতি অরিত মজুমদারকে জানিয়ে দেওয়া হয় সুকুমারবাবুর নাম। হুইপ জারি হয় অরিতের মাধ্যমেই। বাবু এবং ইনামুল শেখের নাম বাদ যাওয়ায়, ইনামুল অনুগামী সদস্যরা হরিহরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক নিয়ামত সেখের বাড়িতে জড় হয়েছিলেন বটে, তবে তাতে খুব লাভ হয়নি।
৪৮ জন সদস্যের মধ্যে যে ২৫ জনই সুকুমারবাবুর পক্ষে সমর্থন জানান। হার অবশ্যম্ভাবী বুঝে সত্যেন চৌধুরীর শিবিরের বাবু শেখের অনুগামীরাও রণে ভঙ্গ দেন বলে খবর। শেষ পর্যন্ত তাঁরাও সুকুমার অধিকারীকেই মেনে নেন।
দলীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, শুভেন্দু অধিকারীর হুইপ কার্যকরী করতে নেপথ্যে থেকে আসরে নামেন, দুই জেলা কার্যকরী সভাপতি সৌমিক হোসেন, নিয়ামত শেখ ও রাজীব হোসেনরা। তাঁরা দফায় দফায় আলোচনা করায় শেষ পর্যন্ত জট কেটে যায়।
তবে গণ্ডগোলের আশঙ্কায় মঙ্গলবারও বহরমপুর বিডিও অফিস চত্ত্বর কার্যত নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রেখে ছিল পুলিশ। এ দিন সকাল থেকেই পঞ্চাননতলা লাগোয়া বিডিও অফিস চত্বরে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার অনীশ সরকারের নেতৃত্বে ছিল ইএফআর, কমব্যাট ফোর্স, সশস্ত্র পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়াররা। সকাল থেকেই ওই এলাকায় সমস্ত দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি এটিএম’র ঝাঁপও ছিল বন্ধ।
এ দিন প্রায় বিনা লড়াইয়ে মাঠ দখল করার পরে সুকুমার বলছেন, ‘‘ভাল লাগছে সবাই আমাকে মেনে নেওয়ায়। দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল।’’ এ দিন, সুকুমারবাবুর নাম বাবু শেখ প্রস্তাব করার পরেই তা সমর্থন করেন আসিফ আহমেদ। ধ্বনি ভোটেই সুকুমারবাবু সভাপতি নির্বাচিত হয়ে যান। সহ-সভাপতি পদে আসিফ আহমেদও বিনা লড়াইয়ে জিতে যান।
এ ব্যাপারে বহরমপুর মহকুমা তৃনমূল কংগ্রেস সভাপতি অরিত মজুমদার বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর হুইপ কার্যকরী করতে সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত ছোটাছুটি করতে হয়েছে। শেষপর্যন্ত বহরমপুরে ভোটাভুটি এড়ানোয় দল ও সকলের মুখরক্ষা হল।’’
আর নবনির্বাচিত সভাপতি সুকুমার অধিকারী বলেন, ‘‘৪৮ জন সদস্যই আমাকে সমর্থন করেছেন, সকলকে নিয়েই দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সিপিএম-কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। বিরোধীদের সব দুর্নীতির তদন্ত করাই আমার প্রথম কাজ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy