প্রতীকী ছবি।
বিয়ের দু’মাস কাটতে না কাটতেই মারা গেলেন এক মহিলা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার নাম সোমা মণ্ডল(২০)। সোমার বাবার অভিযোগ, তাঁকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই।
ঘটনাটি ঘটেছে হরিণঘাটা থানার করমচাবেলে এলাকায়। রবিবার ভোরে মেয়ের বাপের বাড়ির লোকজন খবর পান, তাঁদের মেয়ের সঙ্গে কিছু একটা খারাপ ঘটনা ঘটেছে। তাঁরা দ্রুত সেখানে এসে জানতে পারেন, তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে সোমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পরে পুলিশ দেহটি কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
মেয়ের স্বামী রাজেশ মণ্ডল এবং শাশুড়ি শিলা মণ্ডলকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, মৃত মেয়েটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ওদের দু’জনকে আটক করা হয়েছে। ছেলেটির বাবা পলাতক। তার খোঁজেও তল্লাশি শুরু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই থানার মোল্লাবেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মিত্রপুরে বাড়ি সোমাদের । তাঁরা তিন বোন এবং এক ভাই। সোমাই ছিল সকলের বড়। কাষ্ঠডাঙ্গা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের করমচাবেলে এলাকায় বাড়ি রাজেশদের। তাঁরা এক ভাই এবং এক বোন। রাজেশ পেশায় মাছ বিক্রেতা। সে গ্রামে গ্রামে ঘুরে মাছ বিক্রি করত। ১৭ ডিসেম্বর সামাজিক অনুষ্ঠান করে রাজেশ এবং সোমায় বিয়ে হয়েছিল।
মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে সোমার শ্বশুরবাড়ি থেকে। দিন পঁচিশ আগেও ধার করে চার হাজার টাকা দিয়ে আসা হয়েছিল। অভিযোগ, আবারও টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দিতে থাকে রাজেশরা। তা নিয়ে সমস্যাও দেখা দেয়। এমনকি, সোমাকে বাপের বাড়িতে পাঠানো হত না বলেও অভিযোগ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগেই সোমার কয়েক জন আত্মীয় তাঁকে আনার জন্য মেয়েটির শ্বশুরবাড়িতে গেলেও সোমাকে পাঠানো হয়নি।
সোমার বাবা অনিমেষ সরকার বলেন, “শনিবার রাতে মেয়েকে ফোন করেছিলাম। কিন্তু ফোন ধরেনি। ভেবেছিলাম, হয়তো ওরা ঘুমিয়ে পড়েছে। এ দিন ভোরে পাড়ার লোকেদের কাছ থেকেই খবর পাই, মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে কোনও একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই খবর শুনে ওখানে গিয়ে দেখি, বাড়ির সামনে পুলিশ। আরেকটু এগিয়ে দেখি, ভ্যানের উপর মেয়েকে শুইয়ে রাখা হয়েছে।’’
তাঁর অভিযোগের আঙুল সরাসরি রাজেশ এবং তার পরিবারের দিকেই— “আমার মেয়েকে ওরা মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে। ওদের তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি। ওদের চরম শাস্তি চাইছি।”
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সোমা আত্মঘাতী হয়েছে। এ দিন সোমার দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়। নতুন বিয়ে হওয়া মেয়েটির ঘরে তখনও পাট না ভাঙা নতুন কয়েকটি শাড়ি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy